“লালপুরে কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত জেলার সবচেয়ে বড়গরু সম্বল”-হাসে, দাঁত দেখায়, এমনকি মালিক কাঁদলে চোখে জল আনে!

নাটোরের লালপুর থেকে, ইউসুফ হোসাইনের পাঠানো তথ্যচিত্রে বিস্তারিত ।। অবিশ্বাস্য হলেও পরম সত্য এবার নাটোরে কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত জেলার সবচেয়ে বড় গরু ২০ মণ ওজনের ‘সম্বল’। এটি জেলার লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার স্টেডিয়াম পাড়া গ্রামের খামারি রনি ইসলামের ভান্ডারি ডেরি এগ্রো ফার্মের গরু। আদর করে নাম রেখেছে সম্বল। চার বছর বয়সী সম্বলকে নিজের সন্তানের মতো আদর যতœ আর ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছে রনি ও তার মা । মানুষ ও প্রাণির মধ্যে এতোটা সম্পর্ক ও গভীর ভালোবাসা তৈরি হতে পারে তার ই দৃষ্টান্ত সম্বল। মালিকের আদর ভালোবাসায় এতোটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে গরুর সাথে রনি ও তার মা আদর করে যা করতে বলে গরু তাই করে হাসতে বললে হাসে , চুমু দিতে বললে চুমু দেয় মালিকের মন খারাপে শুয়ে অঝোরে কান্না করে। দূর দূরান্ত থেকে গরুটি দেখতে এবং কেনার উদ্দেশ্যে ভীড় জমা”েছ সাধারণ মানুষ ও ক্রেতারা। খামারি রনি জানান, এটি আমার বাড়ির বাছুর আদর করে নাম রেখেছিলাম সম্বল।

চার বছর যাবত নিজের সন্তানের মত আদর ভালোবাসা মায়া-মমতা দিয়ে বড় করেছি। যখন ছোট ছিল তখন নাম ধরে ডাকলেই ঘর থেকে বেরিয়ে  চলে আসতো। এখন বড় হবার পরে ভালোবাসাটা যেন আরো গভীর হয়েছে। যদি আমি বা আমার মা বলি দাত দেখাও তাহলে দাঁত দেখায় যদি আদর করে বলি চুমু দিতে চুমু দেয়, উঠতে বললে উঠে সুন্দর ভাবে ভালোবেসে শুতে বললে শুয়ে পড়ে খামারি রনির মা জানান, নিজের গোয়ালে জন্ম নেওয়া গরুটিকে ছোট থেকে আদর ভালোবাসা ও যতœ দিয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। এখন সম্বল এই পরিবারের সদস্যদের মতো। প্রতিদিনের দেওয়া খাবার কম হলে রেগে যায় সম্বল। আবার রাতে মশা কামড় দিলে টিনের চালে লেজ দিয়ে ‘ঠাস ঠাস’ শব্দ করে জানান দেয়। খামারি রনিকে না দেখলে মাঝেমধ্যে অভিমান হয়। তখন খামারের অন্য সহকর্মীরা কাছে গেলে রেগে যায়। আবার রনি কাছে গেলেই যেন শান্ত সন্তানের মতো শান্ত হয়ে যায় সম্বল। আবেগাপ্লুত খামারি রনির মা বললেন, যেদিন গরুটি বিক্রি হবে, যেদিন ওকে নিয়ে যাবে সেদিন আমি বাড়িতে থাকতে পারব না। গরুটি আমার খুবই আদরের। তার মা আরো কয়েকটি বা”চা এই গোয়োলে জন্ম দিেেয়ছে। কিš‘ কোনোটি সম্বলের মতো বড় আকারের হয়নি। প্রতিদিন এটি গমের ভুসি, খুদ চালের ভাত ও রান্না করা ভুট্টা,ঘাস লতাপাতা, খাওয়ানো হয়।

লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা ও পরামর্শে প্রাকৃতিক উপায়ে ষাঁড়টি পালন করা হ”েছ। ষাঁড়টির ওজন প্রায় ২০ মণ, প্রাকৃতিক উপাদানের মোটাতাজাকরণ ষাঁড়টি তার কাঙ্ক্ষিত দাম পাবে বলে আশা করা হ”েছ। এ ছাড়া খামারি রনির সাফল্য কামনা করেন এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। নাটোর জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন জানান, এ বছর জেলায় প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২১৫ টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা মতো। নিরাপদ ও স্বা¯’্যসম্মত পশু উৎপাদনে খামারিদেরকে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। নাটোরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গরু সম্বল । তাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা দিতে প্রস্তুত জেলা পশু সম্পদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *