শুনছি শেখ হাসিনা শীগ্রই দেশে ফিরবেন! এমনও শোনা যাচ্ছে প্রেসিডন্ট ট্রাম্পের সহযোগিতায় তিনি দেশে আসবেন! ইতিমধ্যে অনেকগুলো তারিখের কথাই শুনে আসছিলাম বিভিন্ন মহল থেকে। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন প্রিয় নেত্রীকে নিয়ে। কিন্ত ফলাফল কিছুই আসেনি।
আমি মনে করি, আপাতত: শেখ হাসিনা দেশে ফেরার আশা ক্ষীন। কারণগুলো বিশ্লেষন করলে, এরমধ্যে পিলখানায় ৫৭ সেনা অফিসার হত্যা মামলা ২০০৯ সালে। এই ফাইল আবার ওপেন হচ্ছে খুব শীগ্রই। এই ফাইল ওপেন হলে এর দায়ভার শেখ হাসিনার উপরই বর্তাবে। শেখ হাসিনার আমলে ভারতের ইন্দনেই ৫৭ সেনা অফিসারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ভারত পরোক্ষ ভাবে জড়িত। এই মামলা যদি আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচালনা করা হয় তাহলে শেখ হাসিনাও জড়িয়ে পরবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। এই সব বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা একেবারেই ক্ষীন।
২য় কারণ হল, অসংখ্য ছাত্র ও জনতা হত্যার অপরাধ। এটা কিন্ত ইন্টারন্যাশনাল একটি অপরাধ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে এবং মামলা আরও প্রক্রিয়াধীন আছে। জাতিসংঘ থেকে লোক এসে এসব মামলা তদন্ত করে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু মাত্র দেশের প্রেক্ষিতে নয়, ইন্টারন্যাশনাল যদি কারও বিরুদ্ধে মামলা থাকে, তারপর যদি সেটা হত্যা মামলা থাকে সেটা প্রায় গণহত্যার সামিল, এরকম মামলা থাকলে ইঁউরোপের কোন দেশেও তিনি যেতে পারবেন না। এসব মামলা আন্তর্জাতিক ভাবে যে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে এটা কিন্ত একটি রায় আসবে। তখন একজন অপরাধী হিসাবে কখনো তিনি দেশে ফিরতে পারবেন না।
৩য় কারন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ফিরলে তার খুঁটি মজবুত করতে হবে। খুঁটি মজবুত না করলে তার নিরাপত্তার ঝুঁকি অনেক বেশী। অভ্যন্থানের সময় তিনি চেয়েছিলেন ভারতে না গিয়ে নিজ জেলা গোপালগঞ্জে গিয়ে থাকবেন কিন্ত সেনা প্রধান এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তা হতে দেননি। কারন তার নিরাপত্তার ঝুঁকি ছিল অনেক। শেখ হাসিনার পিতার মূর্তিগুলি যেভাবে ভেঙ্গেছে যদি শেখ হাসিনাকে তখন কাছে পেত তা হলে তার লাশও খুঁজে পাওয়া যেত না। অনুকুল পরিবেশ না হওয়া পর্যন্ত তিনি আর দেশে ফিরবেন না। ওঁনার ৩০০ এমপি’র কেউ নেই দেশে। কয়েকজন আছে জেলে। এই পরিস্থিতিতে তিনি কোন ক্রমেই দেশে ফিরতে পারেন না।
বিশ্বের অনেক নেতা জনরোষের কারণে দেশ ছেড়ে পালানোর পর আর দেশে ফিরে আসেননি। আরএমন কোন রেকর্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। এরকম অসংখ্য উদহারণ রয়েছে। আর যদি শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন সেটা হবে একটি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।
আমার মনে হয়, আমেরিকাই শেখ হাসিনাকে আর দেশে ফিরতে দেবেনা। কারণ শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমাকে ফেলে দেওয়ার পেছনে আমেরিকার হাত আছে। তা ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে দম্ভ করে আমেরিকাকে তিরষ্কার করে বলেছিলেন, কে যায় ১৮ ঘন্টা জার্নি করে আমেরিকাতে? না গেলে কি হবে? আমেরিকাকে খুশী না করে কেউ ক্ষমতার মসনদে বসতে পারবেনা। আমেরিকা যখন চায়না শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসুক , তখন সমস্ত পথ তারা বন্ধ করে দেবে। আমেরিকা শেখ হাসিনার ভিসা কেনসেল করার পর ইউরোপের সব দেশ শেখ হাসিনার ভিসা কেনসেল করে দেয়। তিনি ভারতে না গিয়ে ইউরোপের কোন দেশে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্ত ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে তিনি আর যেতে পারেননি। ইউনুসকে বসিয়েছে আমেরিকা। তাই সহজে আমেরিকা চাবেনা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসুক। অনেক কস্টে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে আমেরিকা।
এদিকে দেশে অবস্থান করা আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা কর্মি চাচ্ছে শেখ হাসিনা শীগ্র দেশে ফিরে এসে ক্ষমতায় বসুক। কারণ নেতা কর্মিরা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এই সব মামলার মোকাবিলা করলে তিনি জয়ী হবেন। কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সব গোলাগুলি হয়নি। পুলিশের বুলেটে ছাত্র-জনতা মারা যায়নি। যে সব বুলেট ব্যবহার করা হয়েছে ঐ গুলি পুলিশের কাছে ছিলনা। জামাত শিবিরের কর্মিরা এগুলি ব্যবহার করে ছাত্র জনতা হত্যা করেছে। এরকম অসংখ্য প্রমান আছে। তাই আওয়ামী লীগের কর্মিরা চায় শেখ হাসিনা দেশে এসে মামলা মোকাবিলা করে আবার ক্ষমতায় আসুক।