চ্যানেল7বিডি ডেক্স: বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ২৩৪ বিলিয়ন ডলার ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এ বিষয়ে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন (OSF)-এর চেয়ারম্যান অ্যালেক্স সোরোসের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে আলোচনা
আজ রাজধানীতে এক বৈঠকে অ্যালেক্স সোরোস ও ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট বিনাইফার নওরোজির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে তারা বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠন, পাচার হওয়া সম্পদ উদ্ধার, ভুল তথ্য প্রতিরোধ এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন। অ্যালেক্স সোরোস বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, “ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান দেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি অর্থনৈতিক ও নীতিগত সংস্কারের বিরাট সুযোগ।“
গণঅভ্যুত্থান ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি
প্রধান উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলনে হতাহতদের ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক সংস্কার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, “দাভোস সফরে আমি দেখেছি, আন্তর্জাতিক মহলে গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতনতা নেই। অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে।” তিনি ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনকে এই ঐতিহাসিক আন্দোলনের তথ্য প্রচারে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে। পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।“
তিনি ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনকে “অর্থ পাচারের উৎস চিহ্নিত করে সম্পদ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে” আহ্বান জানান।
অ্যালেক্স সোরোস বলেন, “আমরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থন করার উপায় খুঁজছি।“
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ভুল তথ্য মোকাবিলা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের গণমাধ্যম বর্তমানে অভূতপূর্ব স্বাধীনতা উপভোগ করছে। তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ও অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়ছে।“
তিনি বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছায় এবং বিভ্রান্তি দূর হয়।“
এলডিসি উত্তরণে সহায়তার প্রতিশ্রুতি
ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (LDC) থেকে উত্তরণে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অধ্যাপক ইউনূস এ সহযোগিতাকে স্বাগত জানান এবং বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ কোনো সংকট ছাড়াই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করতে পারে।“
এই বৈঠক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র: বাসস