দীর্ঘদিন পর ঐক্যবদ্ধ বিএনপি……….মৌলভীবাজারে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা………………..

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার :২৪ এর স্বাধীনতার পর প্রেক্ষাপট পরিবর্তন। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর গণতন্ত্রের চর্চায় অনেকটা পূর্ণতা এসেছে। কিন্তু দীর্ঘ এই তিন মাসেও আগের মতো মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির মিছিল মিটিংসহ দলীয় সকল কর্মসূচী পালন হত পৃথকভাবে। এমন চলমান অবস্থার পরিবর্তন করে ঐক্যবদ্ধ করতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। তাই আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ৪ নভেম্বর ৩২ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদনের পর দেখা দিয়েছিল মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। ত্যাগী অনেকেই ঠাঁই পাননি আহবায়ক কমিটিতে এমনও অভিযোগ উঠে। আহবায়ক কমিটির পক্ষে বিপক্ষে হয় মিছিল। এরপর ৫ নভেম্বর রাতে নবগঠিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আহবায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকেই সর্বস্মতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার শপথ হয়। সিন্ধান্ত হয় সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মরহুম এম সাইফুর রহমান এর কবর জিয়ারতের মাধ্যমে সাংগঠনিক ঐক্যবদ্ধ বিএনপির কার্যক্রমের। এরপর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার পৌরসভার কনফারেন্স হলে আলোচনা সভার। এই সিন্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জেলা ও উপজেলার বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের উজ্জীবিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা ফুলের তোড়া নিয়ে মৌলভীবাজার শহরতলী মরহুম এম সাইফুর রহমান এর গ্রামের বাড়ি বাহারমর্দান এলাকায় জড়ো হন। সবাই জিয়ারতে অংশগ্রহন করেন। মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জেলা নেতৃবৃন্দকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এসময় প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র, সাবেক এমপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্য নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য এম নাসের রহমান এর সাথে মিষ্টিমুখ করে ও কুশল বিনিময় করেন। ওখানে উপস্থিত উৎফুল্ল নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ এখন রাজপথের আন্দোলনে একসাথে কাজ করবো আমরা। বড়দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাওয়া পাওয়ার মিল অমিল ও মান অভিমান থাকাটা স্বাভাবিক। তবে টুকটাক যেগুলো আছে তাও দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। এমনটিই জানালেন নবগঠিত কমিটির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূনসহ কয়েকজন নেতা। দীর্ঘ দিন থেকে বিভক্ত থাকা মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ। ভেদাভেদ ভুলে এখন তারা একইমঞ্চে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এম সাইফুর রহমানের কবর জিয়ারতের পর একমঞ্চে বিল্পব ও সংহতি দিবসের প্রথম আলোচনা সভা করেন জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওই সভায় নেতৃবৃন্দের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে নানা কর্মসূচী পালনের প্রতিশ্রুতিতে উজ্জীবিত হয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সাংগঠনিক কাজে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। গেল দুইয়েক বছর আগে এমন দৃশ্য ছিল অবিশ্বাস্য।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা আহবায়ক কমিটির প্রথম আলোচনা সভাটি বিএনপির নেতাকর্মীসহ এই ঘরণার নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল “টক অব দ্যা জেলা”। সমমনা দল নেতাকর্মীদের মুখেও ছিল এনিয়ে নানা আলোচনা। তবে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। গ্রুপিং দ্বন্ধ থাকায় দলের নিবেদীত প্রাণ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কষ্ঠ ও ক্ষোভের অন্ত ছিলনা। জেলার কমিটির ওই দ্বন্ধ প্রভাবিত করেছিল উপজেলা পর্যায়ে সহযোগী সংগঠন গুলিতেও। অবশেষে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে আর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের আন্তরিকতায় দীর্ঘদিনের জিয়ে থাকা অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ অবসান গঠলো। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আয়োজনে পৌর কনফারেন্স হলে জেলার নবগঠিত কমিটির প্রথম সভায় একই মঞ্চে বসেন নেতৃবৃন্দ। 

জেলা বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূনের সভাপতিত্বে ও সদস্য মো: ফখরুল ইসলাম ও মুহিতুর রহমান হেলালের যৌথ সঞ্চলনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ম সদস্য এম নাসের রহমান। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, ভিপি মিজানুর রহমান মিজান, মৌলভী ওয়ালী সিদ্দিকী, আশিক মোশারফ, এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পিপি এডভোকেট ড.আব্দুল মতিন চৌধুরী, জিপি এডভোকেট মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এম এ মুকিত, মোশারফ হোসেন বাদশা, মতিন বকশ, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, মনোয়ার আহমেদ রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ মারুফ আহমদ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ মমসাদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার মজুমদার ইমন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মুহিত, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আহাদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: রুবেল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান।

অন্যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: হেলু মিয়া, বকশী মিছবাহউর রহমান, মাহমুদুর রহমান, আব্দুর রহিম রিপন, এডভোকেট বকশী জুবায়ের আহমদ, আবুল কালাম বেলাল, গাজী মারুফ আহমদ, আনিছুর রহমান বায়েছ, মাহবুব ইজদানী ইমরান, মহসীন মিয়া মধু, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবুর রহমান মজনু, জেলা বিএনপির নেতা এডভোকেট গোবিন্দ পাল, ডা: পরিতোষ দাস গুপ্ত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ইছহাক আহমদ চৌধুরী মামমুন, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, জেলা শ্রমিক দল নেতা আনোয়ার হোসেন, পৌর বিএনপির প্রচার রেজাউল করিম রেজা, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জনি আহমদ, জেলা মহিলা দলের নাসরিন পারভীন, শ্যামলী সুত্রধর, সুফিয়া আক্তার কলি প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *