কেন্দুয়া দোকান নিয়ে সংঘর্ষে বিএনপির দুই গ্রুপের আহত অর্ধশত

জেলা প্রতিনিধি। নেত্রকোনার  কেন্দুয়ায় পৌর শহরের বাজারে দোকান দখলকে কেন্দ্র করে যুবদল নেতা নাছির খন্দকার ও বিএনপি নেতা জসিমের পক্ষে মধ্যে সংঘর্ষে হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছে। বুধবার রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঘন্টা ব্যাপী কেন্দুয়া মধ্য বাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

জসিম মিয়া বাট্টা গ্রামের বাসিন্দ। তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল ভুঁইয়ার ভাই ও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলামের বাবা। তিনি কেন্দুয়া পৌর বিএনপি’র নেতা। অপরদিকে নাসির খন্দকার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি দিগদাইর গ্রামের বাসিন্দা।

ময়মনসিংহে রেফার্ডকৃত আহতরা হচ্ছেন-শাওন (৩৩), রফিকুল (৪০), বাবু (২১), রফিকুল ইসলাম (৫৯) ও রনি (২২)। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও রনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,  ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে এখানে দিগদাইর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাছিরের ভাই দিগদাইর গ্রামের আল আমিন ব্যবসা করত। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়ার ছোট ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া দখল করে অন্যত্র ভাড়া দেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। এরপর বুধবার রাতে বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামে এক ব্যক্তির একটি দোকান ঘরের জায়গা বুধবার রাতে দখল করতে যান পৌরশহরের দিগদাইর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবদল নেতা নাসির খন্দকারের বড় ভাই আল আমিন। একই সময় সোহেল আমিনের পক্ষ নিয়ে ওই জায়গাটি দখল মুক্ত করতে যান চকবাট্টা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূইয়া। একপর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত আহত হয়। নাসির খন্দকার এবং জসিম উদ্দিন ভূইয়া দুজনই কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী গ্রুপের নেতা বলে জানান স্থানীয়রা।

উপজেলা যুবদলের নেতা নাসির খন্দকার সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে মিটিংয়ে থাকার কথা বলে ফোন রেখে দিন।

উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি জয়নাল ভুইয়া জানান, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির ও আহবায়ক ফরহাদ লোকজন নিয়ে একটি দোকানে তালা দিয়েছিল। পরে আমাদের লোকজন বাধা দিলে দোকানে তালা খুলে দেন। কিন্তু দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পাঁচ তাদেরকে লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এর মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এবং সংঘর্ষের মধ্যে উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক নাসির ও আহবায়ক ফরহাদ আমাদের লোকজনের উপর গুলি চালায়। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনুপ কুমার সরকার জনান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ থাকার কথাও জানান তিনি।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে রয়েছে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *