নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, দেশ পুনর্গঠন নিশ্চিত করার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। রবিবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে এই বার্তা দেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূস কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবে, তবে তার আগে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, বেসামরিক প্রশাসন, নিরাপত্তা সংস্থা ও গণমাধ্যমের সংস্কার প্রয়োজন।
এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় রবিবার দুপুরে, যেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনারসহ জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এই সভায় প্রায় ৫০ জন মিশন প্রধান অংশ নেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংকটকালীন সময়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশ একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দ্বিতীয় বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনা সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, বিচার ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। রাজনৈতিক দুর্নীতির কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
কূটনীতিকদের সাথে আলোচনায় ড. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনা। তিনি উল্লেখ করেন, ছাত্র আন্দোলনে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেকে গুরুতর আহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতি পৃথিবীর আর কোনো দেশে ঘটেনি। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আন্তর্জাতিক চুক্তি ও দায়বদ্ধতাগুলো যথাযথভাবে পূরণ করা হবে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেওয়া হবে।