ইতিহাস গড়া এক জয় বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট শুরুর আগে আলোচনা ছিল, পাকিস্তানের কোন পেসার কত উইকেট নেবেন। কারণও ছিল যথেষ্ট—বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের স্কোয়াডে ৬ পেসার, আর সেই সঙ্গে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্পিনারবিহীন একাদশে ৪ পেসার নিয়ে মাঠে নামে পাকিস্তান। তবে, সেই প্রত্যাশিত ফলাফল আসেনি। পাকিস্তানের পেসাররা হয়ে রইলেন কেবল দর্শক!

পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা রান তুললেও, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তারও বেশি রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনারদের দাপটে পাকিস্তানের ব্যাটিং ধসে পড়ে। রাওয়ালপিন্ডিতে দলীয় পারফরম্যান্সের এই সমন্বয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক এক জয়।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩০ রান, যা অনায়াসে তুলে নিয়েছেন দুই ওপেনার। এই জয়টি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম জয় এবং পাকিস্তানের মাটিতেও প্রথম। বিদেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের সপ্তম জয়।

এর আগে সব সংস্করণ মিলিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ ২০ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হেরেছিল। তাই, এই জয়টি বিশেষ কৃতিত্বের। এছাড়া, এটি টেস্টে বাংলাদেশের প্রথমবার ১০ উইকেটের জয়ের স্বাদ।

সফরের আগে বর্তমান পরিস্থিতি এবং সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে বাংলাদেশ দল আলোচনার বাইরে ছিল। অথচ সেই দলই পাকিস্তানের পূর্ণ শক্তির দলকে হারিয়ে দিল।

প্রথম ইনিংসে রাওয়ালপিন্ডির ভেজা উইকেটের সুবিধা নিয়ে পেসাররা ১৬ রানেই পাকিস্তানের ৩ উইকেট ফেলে দিয়েছিলেন। পরবর্তী দুই দিনে ব্যাটসম্যানরা ভালো কন্ডিশনের সুযোগ নেন এবং শেষদিনে স্পিনাররা ভাঙা উইকেটের ফায়দা তুলে নেন।

বাংলাদেশের ফিল্ডিংও ছিল দুর্দান্ত। লিটন দাসের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি ৬টি ডিসমিসালসহ তার অবদান ছিল অনন্য। দলের সবার সমন্বিত প্রচেষ্টাই এই জয়কে নিশ্চিত করেছে।

সর্বশেষ তিন বছরে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের বোলারদের গড় ২২, যা এই সময়ে সর্বনিম্ন। রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ সেই গড়কে ধরে রেখেছে।

পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ২৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করে। দিন শুরুতেই শান মাসুদকে আউট করেন হাসান মাহমুদ। এরপর পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ একের পর এক ধসে পড়ে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ১৪৬ রানে অলআউট হয়, যা টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৪৪৮/৬ ডি. ও ১৪৬ (রিজওয়ান ৫১, শফিক ৩৭, বাবর ২২, মাসুদ ১৪; মিরাজ ৪/২১, সাকিব ৩/৪৪)।
বাংলাদেশ: ৫৬৫ ও ৩০/০ (জাকির ১৫, সাদমান ৯)।
ফলাফল: বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।

সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *