চাঁদে মিলল পানি

অনলাইন ডেস্ক: প্রথমবার ২০০৮ সালে ইসরো জানিয়েছিল, চাঁদের যে অংশে সূর্যালোক পড়ে, সেখানে জলের উপাদান রয়েছে। কিন্তু, সেই উপাদান কী অবস্থায় রয়েছে, তা নিশ্চিত করা যায়নি সেই সময়। পরবর্তী সময়ে নাসার শক্তিশালী টেলিস্কোপের সাহায্যে লাগাতার পর্যবেক্ষণ চালিয়েও এবিষয়ে কোনও নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অবশেষে সোমবার নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠের যে অংশে সূর্যালোক পড়ে, সেখানে জলের অস্তিত্ব মিলেছে। নাসার সায়েন্স মিশন ডিরেক্টরেটের অন্তর্গত অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ডিভিশনের ডিরেক্টর পল হারৎজ বলেন, পৃথিবীতে জল যেভাবে পাওয়া যায়, সেই একই গঠনগতভাবে এবার চাঁদের মাটিতে জল পাওয়া গিয়েছে। নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের নবীন গবেষক ক্যাসে হনিবল তাঁর পিএইচডি গবেষণাপত্রে এই বিষয় নিয়ে কাজ করছিলেন। অবশেষে তিনি সাফল্য পান। নাসার অন্তর্গত স্ট্র্যাটোস্ফেরিক অবজারভেটারি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমির (সোফিয়া) মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠে সূর্যালোক পড়ে, এমন অংশে জল পাওয়া গিয়েছে। তবে কত পরিমান জল সেখানে রয়েছে এবং কীভাবেই বা সেখানে জল এল? সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। হনিবল জানান, ১৯৬৯ সালে আমেরিকার নভোশ্চররা চাঁদ থেকে যখন ঘুরে এসেছিলেন, তখন বিজ্ঞানীরা মনে করতেন চন্দ্রপৃষ্ট সম্পূর্ণ শুষ্ক। যদিও পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যায় চাঁদের দুই মেরুতেই বরফজাতীয় উপকরণের অস্তিত্ব রয়েছে। এরপরেই ২০০৮ সালে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কৃত্রিম উপগ্রহ নিশ্চিত তথ্য দিয়ে জানায়, চাঁদের সূর্যালোক পরে এরকম অংশে জলের উপাদান (হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন) রয়েছে। যদিও তা জল (এইচ২ও) নাকি হাইড্রক্সিল (ওএইচ) যৌগ হিসেবে রয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি ইসরোর গবেষণা। সেই গবেষণার প্রায় ১২ বছরের মাথায় নাসার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন চাঁদে জলের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে। উল্লেখ্য, কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ পল হেনেও একই বিষয়ে কাজ করছিলেন। ক্যাসে হনিবল এবং পল হেনের গবেষণাপত্র একইসঙ্গে ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে নাসাও। একইসঙ্গে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদের দক্ষিণাংশের ক্ল্যাভিয়াস নামক গর্তের কাছে এই জল পাওয়া গিয়েছে। ওই জায়গায় কীভাবে জল এল, তা আরও গবেষণাসাপেক্ষ। একইসঙ্গে এই আবিষ্কারের ফলে আগামীতে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের কাছে চাঁদ সম্পর্কিত গবেষণা এবং মহাকাশের অন্যান্য রহস্য অনুসন্ধান এক অন্য মাত্রা পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *