পার্থ প্রতিম ভদ্র : ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু রাখার জায়গাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে এক পক্ষের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে অপর পক্ষের তিনজন জখম হয়েছে। আহত তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখাঁর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য সালাম ফকিরের বাড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে আহত তিনজন হলেন, গাজীরটেক ইউনিয়নের চর সুলতানপুর গ্রামের দোপাডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিশাদ বেগ (৩৫) ও তার ভাই মজিবর বেগ (৫০) এবং তাদের ভাতিজা শোয়েব বেগ (২৪)। আহতদের চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে ওই এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু তোলায় একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক কে এম ওবায়দুল বারী ওরফে দীপু খাঁ। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন গাজীরটেক ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রিশাদ বেগ। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
ওবায়দুল বারী বালু রাখার জন্য এমপি ডাঙ্গী গ্রামের আওয়াল মুন্সীর কাছ থেকে আওয়াল মুন্সীর মালিকানাধীন পদ্মা নদীর পাড়ে এক একর জায়গা ভাড়া নেন।
মঙ্গলবার রিশাদ বেগ, তাঁর ভাই মজিবর বেগ ও ভাতিজা শোয়েব বেগ ভাড়া নেওয়া জায়গায় খনন যন্ত্র নিয়ে বালু রাখার জন্য আইল করতে যান। এ সময় ওবায়দুল বারির সমর্থকরা রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের তিনজনকে এলোপাথারী ভাবে কুপিয়ে জখম করে।
এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করেন।
চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর কর্তব্যরত চিকিৎসক বন্ধু সুন্দর সাহা বলেন আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিশাদ বেগের ভাই মুরাদ বেগ জানান, ওই জমির মালিক আওয়াল মুন্সী বিদেশে থাকেন। তিনি ওই জায়গা তার ভাই রিশাদকে ভাড়া দেন। ভায়েরা ওই জমিতে কাজ করতে গেলে ওবায়দুল বারীর নেতৃত্বে তার লোকজন তার (মুরাদ) দুই ভাই ও এক ভাতিজাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
কে এম ওবায়দুল বারী বলেন, আমি আওয়াল মুন্সীর কাছ থেকে জমি ভাড়া নেই। আমি শুনতে পারি একদল লোক জমিটি দখল করতে আসে। এ সময় প্রথমে তাদের সাথে কথাকাটা কাটি পরে কোপানোর এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, তিনি আহতদের রক্ষা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফফার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। যে পক্ষ হামলার শিকার হয়েছে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।