নওগাঁয় ৬আগস্টে সব মালামাল লুট, আগুন দিয়ে ৩ বাড়ি ধুলিস্যাৎ….

নওগাঁ প্রতিনিধি : ৬ই আগস্টে নওগাঁ জেলার মান্দা থানার দক্ষিন মৈনমে আমিরুল,একরামুল ও আরিফুলের ৩টি বাড়ী লুট করে আগুন লাগিয়ে ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,  ৫ তারিখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে দেশের সকল জায়গায় লুটপাট, হত্যা, খুন ও আগুন দেওয়ার রেশ ধরে,  ৬ আগষ্টে মৈনমে এই  লুটপাট ও আগুন লাগানো ঘটনা, ঘটনো হয়।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানায়, এই পরিবারের সাথে দুর্বৃত্তদের প্রায় ৩০ বছর ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল এবং কোর্টে মামলা, মকর্দমায় ১৯৬৫ সালে বিনিময় সম্পত্তি মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে আমিরুল রায়ও পেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দূর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে  ৬ আগষ্টে এমন নেককার জনক ঘটনা ঘটায়।

মামলা ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত (৬ আগষ্ট) ২০২৪ ইং তারিখে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নামীয় দূর্বৃত্তরা সহ অজ্ঞাত প্রায় ৩০/৩৫ জন দেশীয় ধাড়ালো অস্ত্র-সস্ত্র সহ সকাল ৭টার সময় পাশাপাশি অবস্থানে ৩ভাইয়ের ৩টি বাড়ীর চারিদিকে ঘেড়িয়ে  বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে সকল বাড়ীর ভিতরে ঢুকে ধান, চাল, আলমারী, সোকেস, থাকা টাকা,পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার সহ বাড়ীতে ব্যবহৃত সকল মালামাল এবং গরু,ছাগল লুট করা শেষে ৩টি বাড়িতেই দূর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। বাড়ীর বাহিরে মহিলারা চিৎকার দিয়ে সাহায্য চাইলেও ঐ পরিস্থিতিতে কেহই ভয়ে এগিয়ে আসতে সাহস পায় না। বাড়ীর মহিলাদেরও এলোপাতারি ভাবে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে।  ছোট ছোট বাচ্চাদেরও দূর্বৃত্তরা পা ধরে দেওয়ালে বারী এবং এক পা নিচে রেখে ছিড়ে ফেলতে লাগলে,বাচ্চার মায়েরা দূর্বৃত্তদের দু,পা জড়িয়ে কাকুতি মিনতি করলে,বাচ্চাদের মেরে না ফেলে,প্রচন্ড মারপিট করে এবং বাচ্চাদের মায়েদের পরোনে থাকা স্বর্ণালঙ্কার গুলো ছিনিয়ে নেয়। বর্তমানেও বাচ্চারা কয়েক জন মানুষকে একত্রিত দেখলে আঁতকে উঠছে,যা একত্রিত কয়েকজন সাংবাদিকদের দেখেও বাচ্চারা আঁতকে উঠছে। আগুনের লেলিহান শিখায় ৩টি বাড়ীর চালার টিন পর্যন্ত পুড়ে ছাড়খার হয়ে যায়। সাথে পুড়ে যায় দরকারী দলিলাদি। দুর্বৃত্তরা শুধু বাড়ীর পুরুষদের খোঁজাখুঁজি করছিল  পুরুষদের পেলে নিশ্চিত হত্যা করতো বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। স্থানীয়রা জানায়, বীভৎস বিভিশিখাময় ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দূর্বৃত্তরা। আতংকে যে যার মনে জীবন বাঁচাতে দৌড়াদৌড়ি করে আত্মগোপনে চলে যায় গ্রামবাসী। সেই ঘটনার দিনের আগে থেকেই বাড়ির পুরুষেরা আত্নগোপনে ছিল। দূর্বৃত্তরা ঘরের আলমারী সোকেস ভাঙ্গচুর করতে, কাঁচ লেগে তাদের হাত একটু-আধটু কেটে গেলে, সেই হাত গুলো দেখিয়ে, বাড়ীর পুরুষ ও মহিলাসহ ৯ জনকে আসামি করে আগেই মান্দা থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং সেই মামলায় মান্দা থানার পুলিশ আমিরুলকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্ররণ করেন। পরবর্তীতে আমিরুলের স্ত্রী বেরাফুল বেগম এবং আমিরুলের ছোট ভাই একরামুলের স্ত্রী মাজেদা বাদী হয়ে, গত ১৮ আগষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে,সেখানে মামলা না নিলে, পরেরদিন ১৯ আগষ্ট নওগাঁ আদালতে ২০জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মাননীয় আদালত মামলা গ্রহন করে, এজাহার স্বরুপ গ্রহন করার জন্য মান্দা থানায় পাঠিয়ে দেন। যার এজাহার নং- মান্দা থানা-৩২১/২৪ ইং এবং-৩২২/২৪ইং। নামীয় আসামিরা হলো- ওয়াদুদ আলী বিশ্বাস,আতাউর রহমান,সালাম,ইসমাইল হোসেন,নজরুল ইসলাম, ফায়সাল আবিদ,মালেক বিশ্বাস,আব্দুল ওয়াহেদ,মাহাবুর রহমান,আঃখালেক,মেসবাউল ইসলাম,মমিনুল ইসলাম,আবুল কালাম,এনামুল হক,আব্দুস সালাম, সাইফুল ইসলাম, মদুদ ইসলাম,সিরাজুল ইসলাম,খোরশেদ আলম,আলিম, নাহিদ। এই আসামিদের গ্রেফতার না করায়, আমিরুল হাজতে থাকা অবস্থায় তার প্রায় ৩বিঘা জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। কিছু দিন আগে কলা বাগান থেকে প্রায় ১৯০ থেকে ২০০টি কলার কাঁদ কেটে নিয়ে গেছে। বর্তমানেও আমিরুল ও তার ভাই সহ তাদের পরিবারকে হুমকির মুখে রেখেছে দূর্বৃত্তরা এবং খুনের হুমকি অব্যহত রেখেছে। এবং গত রবিবারে আবারও প্রায় ২ বিঘা জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে। দূর্বৃত্তদের আসফালং এবং হুমকির জন্য ৩টি পরিবারের সদস্যরা আতংকে দিন যাপন করছে।

এ বিষয়ে ঠিকানা অনুযায়ী আসামি বক্তব্য নিতে গেলে তাদের কাহকে পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে মান্দা থানার মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল করিম মোবাইল ফোনে জানান, মামলাটির তদন্তে দায়ীত্বে তিনি আছেন এবং আসামিদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা অব্যহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *