স্বামী হত্যায় প্রেমিকসহ স্ত্রীর ফাঁসি…

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট রাতে সাবিনা তার স্বামী হযরত আলীকে আসামি লিয়াকত আলীর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। হযরত গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কৌশলে একই উপজেলার কুতিকুড়া আঁতলা বিলে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। ময়মনসিংহে স্বামীকে হত্যার মামলায় প্রেমিকসহ স্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে দণ্ডিতদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক আলী মনসুর রোববার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে লিয়াকত আলী ও তার প্রেমিকা একই গ্রামের কাজিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা. সাবিনা খাতুন আদালত পুলিশের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবিনা খাতুন একই এলাকার লিয়াকত আলীর ঢাকার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। সেই থেকে লিয়াকত তার স্ত্রীর অগোচরে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে ২০২১ সালে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়ে লিয়াকত সপরিবারে ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি গোরকপুরে ফিরে আসেন। সাবিনা খাতুনও ঢাকা থেকে ফিরে তার বাবার বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন। এদিকে একই গ্রামের হযরত আলী প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর একাই ছিলেন। পরে সামাজিক আলোচনার মাধ্যমে হযরত আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাবিনা খাতুনের। সংসার করার সময় প্রায়ই লিয়াকত আলী হযরত আলীর বাড়িতে যাতায়াত করে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন।

ঘটনার মাসখানেক আগে হযরত আলী তার ঘরে সাবিনা খাতুন ও লিয়াকত আলীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে উভয়কে গালমন্দ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পথে আসামি লিয়াকত ও সাবিনা খাতুন হযরত আলীকে বাধা মনে করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ঘটনার দিন ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সাবিনা খাতুন মোবাইল ফোনে তার স্বামী হযরত আলীকে আসামি মো. লিয়াকত আলীর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। হযরত আলী গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কৌশলে একই উপজেলার কুতিকুড়া আঁতলা বিলে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

লিয়াকত হত্যার পর মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখেন এবং হযরত আলীকে হত্যার বিষয়টি মোবাইল ফোনে সাবিনাকে জানিয়ে দেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *