কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদ…..

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব — রেজিস্ট্রি অফিসে অবৈধভাবে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং দালালদের মাধ্যমে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা সাব– রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইমরুল খোরশেদ।এখন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস পরিনতি হয়েছে অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতির আখড়ায়। এই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রেশন, দলিল সম্পাদন, নকল উঠানো, রেকর্ড তলাশি, সংশোধন এমকি জমির শ্রেণী পরিবর্তনের নামে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি এবং গ্রাহকদের নানাভাবে হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদের বিরুদ্ধে । ওই রেজিস্ট্রি অফিসে দালাল সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করেন ইমরুল বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ । এভাবেই সাব –রেজিস্টার ইমরুল খোরশেদ অবৈধভাবে দুর্নীতি , ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার এই দুর্নীতির কারণে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই সুযোগ পেয়ে তারাও দলিল গ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নানাভাবে কৌশলে অর্থের বিনিময়ে জাল জালিয়াতি মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার নিয়েন্ত্রনে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন অফিসের ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ ঘুষের নেটওয়ার্ক, জাল-জালিয়াতি কখনো অস্তিত্বহীন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে কখনো বা ভুয়া কমিশনে দলিল সম্পাদনের সাধারন মানুষের জমি প্রভাবশালীদের লিখে দেওয়া, আর এসব অপকর্ম করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা।এছাড়াও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেন ইমরুল বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। দিনে বেলা অফিসের কর্ম ঘটাতেই শুধু নয়, রাতেও এ দপ্তরে চলে তার সিডিকেটের অপতৎপরতা। যত ধরনের দুইনাম্বারী কাজ করে থাকেন সাব– রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদ। ঢাকা জেলার সাব–রেজিস্ট্রার অফিসে তার নিয়োজিত দালালরা পজেটিভ সিগন্যাল না দিলে সাব –রেজিস্ট্রার ইমরুল সেসব দলিলে স্বাক্ষর করেন না। আবার যখন পজেটিভ সিগন্যাল দেয় তখন ইমরুলের স্বাক্ষর হয়ে যায় দলিলসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে। তার মানে হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে এইসব অপকর্ম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করছেন তিনি । একপর্যায়ে চাকুরি শুরু থেকে একে পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য শুরু করে দেন ইমরুল। কিন্তু ভাগ্যর চাকা ঘুরতে সময় লাগে না বেশিদিন হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন সাব– রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইমরুল খোরশেদ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের আস্তভাজন হিসেবে তাদের ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ সাব– রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত থাকাকালীন দলিলসহ বিভিন্ন কাজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন ইমরুল।

এছাড়াও ঢাকা জেলার তেজগাঁও রেজিস্ট্রি অফিস কমপ্লেক্সে বিভিন্ন সাব-রেজিস্ট্রার অফিস তার চাকুরিকালিন প্রত্যেকটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বিগত আওয়ামী লীগের সরকারের সাবেক মন্ত্রী এমপিদের নাম ভাঙ্গিয়ে এককভাবে দুর্নীতি অনিয়ন মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইমরুল খোরশেদ। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কালীন তিনি অন্যান্য সাব রেজিস্টারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র নাটক সাজিয়ে হয়রানি করতেন। এই সুযোগে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন ইমরুল। তিনি তার অফিসের ওমেদা ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রশাসনের হ্যালো ভাই কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ইমরুল । এভাবেই দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন তিনি।

মোহাম্মদ কাউসার আহমেদ সহ একাধিক গ্রাহকদের অভিযোগে মাধ্যমে জানা গেছে, সাব– রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইমরুল খোরশেদের দুর্নীতির চিত্র ।

গ্রাহকরা আক্ষেপ করে বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখি এককভাবে একজন সাব– রেজিস্ট্রার কি করে এত সম্পদের মালিক হলেন। তখন ঘুষ নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ওমেদা, দালাল ও কর্মচারীদের । কেননা, এই সুযোগটাই কাজে লাগান অন্যান্য কর্মচারীরাও। সব ঘুষের টাকা লেনদেন করতেন তিনি। অন্য সাব-রেজিস্ট্রারদের নামের দলিল ভেদে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন তিনি । নামমাত্র টাকা দিতেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এভাবেই ইমরুল খোরশেদ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বুনে যায় ।
এই অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তার ভয়ে তটস্থ থাকেন সবই তাকে সমীহ করে চলেন।

তার বিস্তারিত জানার জন্য অনুসন্ধানে গেলে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক তার নিকটস্থর একজনের কাছ থেকে জানা যায়, তিনি অবৈধ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাইরে তার এক আত্মীয়র কাছে পাঠিয়ে কালো টাকা সাদা করে থাকেন। শুধু তাই নয় ঢাকা শহরে বাড়ি ও বেশ কয়টি ফ্ল্যাট রয়েছে । শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার আক্কেলপুর মাহমুদ মুন্সি কান্দি মোহাম্মদ আরশেদ আলী ছেলে ইমরুল। গ্রামের বাড়িতেও অসংখ্য জমি ক্রয় করেছেন ইমরুল, অভিযোগকারী মাধ্যমে জানা যায় । এছাড়াও নামে বে নামে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার পরিচয় পত্র নাম্বার ১০১৭ ০৯ ৮৭ ০৬। টিআইএন নাম্বার ৭৮৮০২৫৫৯০৫৬০। কর সার্কেল –৫৮,কর অঞ্চল -৩ ঢাকা। তার বর্তমান ঠিকানা– মিরপুরের মনিপুর ১২১৬ নাম্বার বাসায় । তার ষষ্ঠ তলা বাসাটি কয়েক কোটি টাকা দিয়ে নির্মাণ করেছেন । সেই বাসাটি ইমরুল খোরশেদ ও তার স্ত্রী নামে রয়েছে। ইমরুল সকল প্রকার দুর্নীতি অপকর্মের কথা তার সংশ্লিষ্ট অফিসের সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবগত রয়েছেন । দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মোহাম্মদ শহিদুল করিম। তার অভিযোগে মাধ্যমে ইমরুল খোরশেদের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্য এককভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। চড়েন দামি বিলাসবহুল গাড়ীতে। যা সম্পূর্নরুপে দুদক চোখের আড়ালে। তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের ঘুষ না দিলে এই অফিসে একটি দলিলও নিবন্ধন হয় না। তার আঙ্গু হেলনে চলেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

অভিযোগকারী শহিদুল করিম লিখিত অভিযোগে আরও বলেন, ঢাকা জেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব– রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ে ও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা তদন্ত করলে তার সবকিছু বেরিয়ে আসবে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার আকুল আবেদন ইমরুল খোরশেদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে আইনে আওতায় এনে বিচার করা হোক। তাতে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। এবং সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গ্রাহকদের সেবা দিতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *