ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে কলেজ কাউন্সিলের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে কলেজ গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন, ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের দাবিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কলেজ কাউন্সিলের জরুরি সভা ডেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

জরুরি সভার সিদ্ধান্তগুলো নিম্নরূপ:

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস, ছাত্র ও ছাত্রী হোস্টেলে সকল ধরনের ছাত্র রাজনীতি (যেমন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্রসংসদ, ছাত্রইউনিয়ন) এবং শিক্ষক রাজনীতি (যেমন স্বাচিপ, বিএমএ, ড্যাব) নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ যদি ক্যাম্পাসে বা হোস্টেলে রাজনীতিতে জড়িত প্রমাণিত হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীদের কোনো শিক্ষক ভবিষ্যতে একাডেমিকভাবে হেনস্থা করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলেজ ও হোস্টেলে র‍্যাগিং ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার, একাডেমিক ক্লাসে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার এবং ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা সরাসরি বিরোধিতা করেছেন, হুমকি দিয়েছেন বা শান্তি মিছিল আয়োজন করেছেন, তাদের পদত্যাগ, বদলি, বা লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা নিশ্চিত করা হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ছাত্র রাজনীতির কারণে তারা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। ছাত্রলীগের কারণে শিক্ষকরাও আতঙ্কিত ছিলেন এবং কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না। কলেজে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে আসেননি। তারা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানাচ্ছিলেন। শনিবার ক্লাস বর্জন করে গেটে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে জরুরি সভা ডেকে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। সভায় ৬০-৭০ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার, কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল কাদের পদত্যাগ করেন। তিনি চুক্তিভিত্তিক অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তবে এখনো পর্যন্ত এই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *