বিআরটিএ লাইসেন্স শাখার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের উল্লাহ’র দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের পরও স্বপদে বহাল !

নিজস্ব প্রতিবেদক : আ.লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী-এমপিদের ক্ষমতা অপব্যবহার করিয়ে ঢাকা মেট্রো-২ বিআরটিএ (ইকুরিয়া) লাইসেন্স শাখার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের উল্লাহ দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের পরও স্বপদে বহাল ! বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মেট্রো – ২ এর ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ ইকুরিয়া লাইসেন্স শাখার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের উল্লাহ চৌধুরী দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতিদিন ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শেখ জাকের। অবৈধভাবে লাইসেন্স প্রাপ্তি পরীক্ষার্থীকে হয়রানি ও টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স দেওয়ার সুবাদে এবং সকল দালালদের নিয়ন্ত্রণ করে অবৈধভাবে ঘুষ দুর্নীতি ও বিভিন্ন তদবির করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে উচ্চমান সহকারী শেখ জাকেরের বিরুদ্ধে।

গ্রাহকদের হয়রানির সহ বিভিন্ন ধরনের অবকর্মের ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ও নরসিংদী জেলার সদর নরসিংদীর বাসিন্দা শেখ জাকের। তার বাবার নাম শেখ আতাউল্লাহ চৌধুরীর। জাকের ক্ষমতা দেখি চাকুরি শুরু থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত ক্ষমতা অপব্যবহার করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন দালালের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ মেট্রো সার্কেল-২ সহ অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি, ঘুষ-বানিজ্য মাধ্যমে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন লাইসেন্স থাকার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের নিরবে। কেরানীগঞ্জ ইকুরিয়া বিআরটিএ লাইসেন্স শাখার এর দালাল মহিউদ্দিন সুমন ও সোহেলের মাধ্যমে নিয়োমিত অন্যান্য দালালদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিআরটিএ এব পরীক্ষা ছাড়াই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গাড়ীর লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের সাবেক ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সহযোগিতা নিয়ে বিআরটিএ’র লাইসেন্স শাখাটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে । তিনি এককভাবে দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্যএবং দালালদের মাধ্যমে গ্রাহক হয়রানি ও অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাজিব হাসান।

লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে জানা গেছে, বিআরটিএ মেট্রো সার্কেল- ২, কেরানীগঞ্জ ইকুরিয়া কর্মরত আছেন শেখ জাকের। তিনি আবার বিআরটিএ লাইসেন্স শাখায় মোটরযান পরিদর্শক মো. সালেহ আহমেদের সহযোগিতায় জাকের এককভাবে প্রতিনিয়ত দালালের মাধ্যমে পরীক্ষা ছাড়াই ঘুষের টাকা বিনিময়ে লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিয়ে থাকেন। মেট্রো- ২ বিআরটিএর কয়েক ডজন দালালের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে মোটা অংকের ঘুষের টাকার নিয়ে থাকেন বলে সংশ্লিষ্ট অফিসের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাধিক অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে । শেখ জাকেরের দুর্নীতি ও অপকর্মীর টাকার ভাগ মোটরযান পরিদর্শক সালেহ আহমেদ নিয়মিত ভাগ পান বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। অর্থের ভাগ পাওয়ার কারণে সর্বোত্ত সহযোগিতা করেন সালেহ ।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, প্রতিটি লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে থাকেন অর্থের বিনিময়ে। প্রতিটি গাড়ীর লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিতে সর্বনিম্ন ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন। তার কয়েকজন সহকারীরা এইসব বিষয়ে তাকে সহযোগিতা করে থাকেন। তার নিয়োজিত দালালের মাধ্যমে নিয়মিত গ্রাহকের নিকট থেকে টাকা আদায় করে থাকেন। এই বিষয়ে একাধিক প্রমান রয়েছে ।

লিখিত অভিযোগে আরো জানা যায়, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ বিআরটিএ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদন ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্থানীয় মন্ত্রী এমপিদের পরিচয় দিয়ে তিনি নিজে এবং তার অফিসের দালালের মাধ্যমে নিয়মিত গ্রাহকদের নিকট ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ঘুষ দুর্নীতি ও বিভিন্ন অপকর্মের কারণে বিআরটিএ থেকে অনেকেই বদলি হয়ে গেলও লাইসেন্স শাখার শেখ জাকের ও মোটরযান পরিদর্শক সালেহ আহমেদ বদলি হচ্ছে না কেন ? কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসর ও বিআরটিএ এর মেট্রো-২, প্রভাবশালী লাইসেন্স শাখার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের এবং মটরযান পরিদর্শক সালেহ আহমেদ এখনও তাদের স্বপদে বহাল রয়েছেন।

তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো বিআরটিএ তে কোনো কর্তৃপক্ষ নেই বলে তিনি সবার কাছে বলে বেড়ান। তার অবৈধ ক্ষমতার প্রভাবে বিআরটিএ মেট্রো সার্কেল-২, লাইসেন্স শাখা বর্তমানে ধ্বংঘের দারপ্রান্তে।

ভুক্তভোগী আবুল কাশেম জানান, ইকুরিয়া বিআরটিএতে যানবাহন সম্পর্কে যেকোনো কাজ করতে আসলে সরকারিভাবে কোন কাজ সঠিকভাবে করিয়ে নেওয়া যায় না। সরকারিভাবে কাজ করতে গেলে তাকে কয়েক জোড়া জুতা ক্ষয় করতে হবে। আর মাসের পর মাস ঘুরতে হবে। কিন্তু আবার যদি লাইসেন্স শাখার উচ্চমান সহকারী শেখ জাকের মাধ্যমে কাজ করতে গেলে সব কাজ সহজেই করা যায়। তার মানে হল দালালের মাধ্যমে ঘুষ দিলেই সব কাজ হয়ে যায় তাড়াতাড়িতে । শেখ জাকেরর বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিআরটিএ এর গ্রাহকগণ খুবই উপকৃত হবেন।

অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, তার ঢাকায় বাড়ী এবং ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়াও নিজ গ্রামের বাড়িতে নামে বে নামে জাগায়, জমির সম্পদের মালিক। বিআরটিএ তে চাকুরী করার সুবাদে তিনি এই সুবিধা গ্রহণ করছেন। ভুক্তভোগী কবির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমি একটি লাইসেন্স করার জন্য কাগজপত্র জমা দিলে আমাকে দিনের পর দিন ও মাসের পর মাস ঘুরাইতো। যখনই দালালের মাধ্যমে টাকা দেই। বিনিময়ে তাড়াতাড়ি লাইসেন্সটা পেয়ে যাই। তিনি আরো বলেন, বি আর টি এতে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। দালাল সিন্ডিকেট দের বিআরটিএ থেকে বিতাড়িত না করলে গ্রাহকরা কোন কাজ সঠিকভাবে করতে পারবেন না। তার বিষয়ে তদন্ত করলে আরও অসংখ্য তথ্য পাওয়া যাবে। উপরোক্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রলয়ের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *