নওগাঁর মান্দায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক শিক্ষক এখনো চাকরিতে বহাল “খুঁটির জোর কোথায়”

এ.বি.এম.হাবিব : নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার গণেশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ গুলজার রহমান একজন দন্ডপ্রাপ্ত বা সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হয়েও  প্রায় ১ বছর ধরে দিব্বি চাকরিতে বহাল রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাঙ্গাল পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক স্থানীয় মোঃ সমশের আলী সরদারের ছেলে মোঃ গুলজার হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীসহ একাধিক এনজিও  এবং বিভিন্ন এলাকার পরিচিত বহু মানুষের কাছ থেকে চেকের পাতা দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া ।

মামলা সুত্রে জানা যায়, মামলা নং- ৩০৫ মান্দা বিজ্ঞ আমলী আদালত, নওগাঁ। গত প্রায় ৭বছর আগে মান্দা থানার মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মোঃ খয়বর আলীর ছেলে মোঃ খায়রুল ইসলামের ২০১৯ সালের দায়ের করা অর্থ আত্মসাৎ এর মামলার গত বছর ৩০/১২/২৩ ইং তারিখে গুলজার নামের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে  রায় হয়।

 এরপর আইনের চোখে পলাতক থাকলেও সে দিব্বি প্রায় ১১মাস ধরে চাকরি করেই চলছেন।স্থানীয়রা নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, স্কুলের হেড মাস্টার কাশেমকে  কিছু টাকার বিনিময়ে হাত করে, স্কুলে না এসেও ৭ দিন ১৫ দিন পর পর এসে শুধু স্বাক্ষর করে যান এবং বেতনও প্রতি মাসেই তুলে নেয়।

গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে বাঙ্গালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেলে দেখা যায়, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গুলজার ক্লাস নিচ্ছেন। ক্লাস শেষে বেরুলে, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হয়েও কিভাবে ক্লাস নিচ্ছেন বা চাকরি কিভাবে এখনো রয়েছে জিজ্ঞেসা করিলে, অকপটে তিনি স্বীকার করে বলেন,হেড মাস্টার কাশেম সাহেব তাকে হেল্প না করলে এতো কিছু করা সম্ভব হতো না বলে জানায়। এমন সময় পুলিশ গুলজার মাস্টারকে গ্রেফতার করতে আসলে  প্রধান শিক্ষক কাশেম বাঁধা দিয়ে, গুলজার মাস্টারকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। এ বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এভাবে গ্রেফতার করার কোন নিয়ম নেই, এটা নেই, ওটা নেই বলে পুলিশের সাথে তর্কে জড়িয়ে যায় এবং পুলিশদের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি খারাপ পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন এবং তিনি মান্দা এটিও,র সাথেও পুলিশদের কথা বলিয়ে দেন। সাংবাদিকেরা সাজা প্রাপ্ত আসামিকে পালিয়ে দিলেন কেন? এটা কি নিয়ম আছে আর প্রায় ১বছর ধরে সাজা প্রাপ্ত আসামি কিভাবে চাকরি করেন, আপনি কি কোনই ইনফরমেশন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দেন নাই, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তিনি এই গুলজার শিক্ষক সমন্ধে সকল ইনফরমেশন দিয়েছেন কিন্তু উপজেলা শিক্ষা অফিসার কেন এ্যাকশন নেন নাই তা তিনি জানেন না বলে জানান।

স্থানীয় ভাবে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে, আসামি গুলজার শিক্ষকের বিরুদ্ধে চিটার,বাটপার বলে উল্লেখ্য করে বলেন,বহু মানুষের টাকা মেরে খেয়েছে এই শিক্ষক। বহু মানুষের টাকা মেরে পঙ্গু করে রেখেছে এই গুলজার মাস্টার। অনেক সংসারও ধংশ করেছে এই কুলাঙ্গার। একজন শিক্ষক এমন চিটার হয় কি করে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি এই প্রধান শিক্ষকের জন্যই, চাকরী করতে পারছে বলে উচ্চস্বরে কথা বলতেই প্রধান শিক্ষক কাশেম স্কুলের ভিতর চলে যায়। উপস্থিত স্থানীয় সকলেই এই গুলজার মাস্টারের কঠিন শাস্তির দাবী জানান।

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন মামলার রায় হয়ে গেলে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি কোন ভাবেই চাকরিতে বহাল থাকতে পারবে না। হয়তো বিষয়টি আমাদের কেহ জানাই নাই। তিনি বলেন, তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে, তিনি অবশ্যই আইনগত ব্যাবস্থা নেবেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *