তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রার ওমেদা রাজিব সীমাহীন ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অপকর্মের মুলহুতা !

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে পল্লবী শাখার পরিনতি হয়েছে অনিয়ম, ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায়। এ কমপ্লেক্সরই জমি রেজিস্ট্রেশন, দলিল সম্পাদন, নকল উঠানো, রেকর্ড তলাশি, সংশোধন এমকি জমির শ্রেণী পরিবর্তনের নামে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন দুর্নীতি এবং নানাভাবে হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে অমেদার রাজীব হোসেনের বিরুদ্ধে।

রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স উমেদারদের গডফাদার রাজীব হোসেন। কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে নিয়োগ দেওয়া এই উমেদার। তার নিয়েন্ত্রনে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন অফিসের ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ ঘুষের নেটওয়ার্ক, জাল-জালিয়াতি কখনো অস্তিত্বহীন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে কখনো বা ভুয়া কমিশনে দলিল সম্পাদনের সাধারন মানুষের জমি প্রভাবশালীদের লিখে দেওয়া, আর এসব অপকর্ম করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা দিনে বেলা অফিসের কর্ম ঘটাতেই শুধু নয়, রাতেও এ দপ্তরে চলে তার সিডিকেটের অপতৎপরতা। যত ধরনের দুইনাম্বারী কাজ করে থাকেন ওমেদা রাজিব হোসেন।

রাজিব হোসেন সাব-রেজিস্ট্রারকে পজেটিভ সিগন্যাল না দিলে সাব-রেজিস্ট্রার সেসব দলিলে স্বাক্ষর করেন না। আবার যখন রাজিব পজেটিভ সিগন্যাল দিলে তখন রেজিস্টারে স্বাক্ষর হয়ে যায় দলিলে। তার মানে হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে এইসব অপকর্ম রাজিব সিন্ডিকেট করছেন।

জানা গেছে একসময়ে তিনি রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স গেটে সামনে দাড়িয়ে অফিস স্টাদের সাথে যোগাযোগে মাধ্যমে দালালি কাজ করতেন। একপর্যায়ে দালালীর অভিজ্ঞতা অর্জন করে অর্থের বিনিময়ে দৈনিক ৬০ টাকা মজুরি হিসেবে উমেদার চাকুরি নেয় রাজিব। চাকুরি শুরু থেকে একে পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য শুরু করে দেন। নিয়োগপত্র ছাড়াই কর্তপক্ষে মৌখিক অনুমতিতে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ভাগ্যর চাকা ঘুরতে সময় লাগে না বেশিদিন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন আমলে সে সময় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রশাসনের হ্যালো ভাই কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রাজিব হোসেন। এভাবেই দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। আবুল কালাম সহ একাধিক গ্রাহকদের অভিযোগে মাধ্যমে রাজিব হোসেনের ঘুষ দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন। গ্রাহকরা আক্ষেপ করে বলেন আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখি এককভাবে একজন ওমেদা কি করে এত সম্পদের মালিক হলেন। তখন ঘুষ নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় উমেদারদের গডফাদার রাজীব হোসেনকে। কেননা, এই সুযোগটাই কাজে লাগান রাজিব। সব ঘুষের টাকা লেনদেন করতেন তিনি। সাব-রেজিস্ট্রারদের নাম দলিল ভেদে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন তিনি । নামমাত্র টাকা দিতেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এভাবেই রাজিব আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বুনে যায় ।

এর পরই রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে উমেদারদের গডফাদার হয়ে উঠেন রাজিব। এই অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তার ভয়ে তটস্থ থাকেন সবই তাকে সমীহ করে চলেন। তার বিস্তারিত জানার জন্য অনুসন্ধানে গেলে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক নিকটস্থর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি সাব-রেজিস্ট্রারদের অবৈধ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় তার এক আত্মীয়র কাছে পাঠিয়ে কালো টাকা সাদা করে থাকেন। এছাড়ও মিরপুরের দলিল লেখক শফিকুল ইসলামের তার মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেছে রাজিব। মোবাইল নাম্বার ০১৬৭৫৬৯৭১৪৮। এই নাম্বার দিয়ে গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও তকদির বাণিজ্য করে থাকে রাজীব।

শুধু তাই নয় ঢাকা শহরে বাড়ি ও বেশ কয়টি ফ্ল্যাট রয়েছে এবং তার গ্রামের বাড়িতেও অসংখ্য জমি ক্রয় করেছেন অভিযোগকারী মাধ্যমে জানা যায় । আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মো. আবুল কাশেম। অভিযোগে মাধ্যমে রাজীবের দুর্নীতি, অনিয়ম অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্য এককভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। চড়েন দামি ব্যক্তিগত বিলাসবহুল গাড়ীতে। যা সম্পূর্নরুপে দুদক চোখের আড়ালে। রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের ঘুষ না দিলে এই অফিসে একটি দলিলও নিবন্ধন হয় না। তার আঙ্গুর হেলনে চলেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

অভিযোগকারী আবুল কাশেম লিখিত অভিযোগে আরো বলেন, রাজীব হোসেনের বিরুদ্ধে আইন উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের উচ্চপর্যয় কর্মকর্তারা তদন্ত করলে তার সবকিছু বেরিয়ে আসবে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার আবেদন রাজিবের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে আইনে আওতায় এনে বিচার করা হোক। তাতে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উপকৃত হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *