ঘুষ-দুর্নীতি অনিয়মে কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন মুন্সিগঞ্জ জেলার রেজিস্ট্রার রমজান খান !

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জ জেলার সাব — রেজিস্ট্রি অফিসে অবৈধভাবে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং দালালদের মাধ্যমে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খান। এখন মুন্সিগঞ্জ জেলার সাব — রেজিস্ট্রি অফিস পরিনতি হয়েছে অনিয়ম, ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায়। এই সাব– রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রেশন, দলিল সম্পাদন, নকল উঠানো, রেকর্ড তলাশি, সংশোধন এমকি জমির শ্রেণী পরিবর্তনের নামে ঘুষ গ্রহণ সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি এবং নানাভাবে হয়রানির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে রেজিস্ট্রার রমজান খানের বিরুদ্ধে । ওই রেজিস্ট্রি অফিসে দালাল সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করেন রমজান খান বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এভাবেই রেজিস্টার মোহাম্মদ রমজান খান অবৈধভাবে দুর্নীতি , ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার দুর্নীতির কারণে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই সুযোগ পেয়ে তারাও দলিল গ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও নানাভাবে কৌশলে অর্থের বিনিময়ে জাল জালিয়াতি মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার নিয়েন্ত্রনে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন অফিসের ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সহ ঘুষের নেটওয়ার্ক, জাল-জালিয়াতি কখনো অস্তিত্বহীন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে কখনো বা ভুয়া কমিশনে দলিল সম্পাদনের সাধারন মানুষের জমি প্রভাবশালীদের লিখে দেওয়া, আর এসব অপকর্ম করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। দিনে বেলা অফিসের কর্ম ঘটাতেই শুধু নয়, রাতেও এ দপ্তরে চলে তার সিডিকেটের অপ তৎপরতা। যত ধরনের দুইনাম্বারী কাজ করে থাকেন রেজিস্ট্রার রমজান খান। মুন্সিগঞ্জ জেলা সাব–রেজিস্ট্রার অফিসে তার নিয়োজিত দালালরা পজেটিভ সিগন্যাল না দিলে রেজিস্ট্রার সেসব দলিলে স্বাক্ষর করেন না। আবার যখন পজেটিভ সিগন্যাল দেয় তখন রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর হয়ে যায় দলিলে। তার মানে হচ্ছে অর্থের বিনিময়ে এইসব অপকর্ম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করছেন । একপর্যায়ে চাকুরি শুরু থেকে একে পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য শুরু করে দেন। কিন্তু ভাগ্যর চাকা ঘুরতে সময় লাগে না বেশিদিন হঠাৎ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খান। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের আস্তভাজন ও তার ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে মুন্সিগঞ্জ জেলা সাব– রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত থাকাকালীন দলিলসহ বিভিন্ন কাজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মীর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন রমজান খান। এছাড়াও ঢাকা জেলার তেজগাঁও রেজিস্ট্রি অফিস কমপ্লেক্সেসে পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রার অফিস তার চাকুরিকালিন প্রত্যেকটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বিগত আওয়ামী লীগের সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নাম ভাঙ্গিয়ে এককভাবে দুর্নীতি অনিয়ন মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রমজান খান। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কালীন তিনি অন্যান্য সাব রেজিস্টারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র নাটক সাজিয়ে হয়রানি করতেন। এই সুযোগে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন রমজান খান। তিনি তার অফিসের ওমেদা ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রশাসনের হ্যালো ভাই কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধভাবে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রমজান খান । এভাবেই দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। আবুল কাশেম সহ একাধিক গ্রাহকদের অভিযোগে মাধ্যমে রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রমজান খানের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন । গ্রাহকরা আক্ষেপ করে বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখি এককভাবে একজন রেজিস্ট্রার কি করে এত সম্পদের মালিক হলেন। তখন ঘুষ নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ওমেদা ও কর্মচারীদের । কেননা, এই সুযোগটাই কাজে লাগান অন্যান্য কর্মচারীরাও। সব ঘুষের টাকা লেনদেন করতেন তিনি। সাব-রেজিস্ট্রারদের নামের দলিল ভেদে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন তিনি । নামমাত্র টাকা দিতেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এভাবেই রমজান খান আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বুনে যায় ।
এই অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তার ভয়ে তটস্থ থাকেন সবই তাকে সমীহ করে চলেন। তার বিস্তারিত জানার জন্য অনুসন্ধানে গেলে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক নিকটস্থর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি অবৈধ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাইরে তার এক আত্মীয়র কাছে পাঠিয়ে কালো টাকা সাদা করে থাকেন। শুধু তাই নয় ঢাকা শহরে বাড়ি ও বেশ কয়টি ফ্ল্যাট রয়েছে এবং তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানার আজমপুর গ্রামের বাড়িতেও অসংখ্য জমি ক্রয় করেছেন অভিযোগকারী মাধ্যমে জানা যায় । এমনকি তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম নামে ও জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও নামে বে নামে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রেজিস্ট্রার রমজান খানের বাবার নাম মোহাম্মদ আলী আজম খান। তার পরিচয় পত্র নাম্বার ৬৪ ০৪ ৯৯ ৮৩ ৬৮। টিআইএন নাম্বার ২৪ ৮২ ৫২ ৮৭ ৩৩ ১৭। কর সার্কেল –৪,কর অঞ্চল কুমিল্লা। তার বর্তমান ঠিকানা– ১০২ পশ্চিম নাখালপাড়া তেজগাঁও। রমজান খানের সকল প্রকার দুর্নীতি অপকর্মের কথা তার সংশ্লিষ্ট অফিসের সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা অবগত রয়েছেন । আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মোহাম্মদ ছগির হোসেন। অভিযোগে মাধ্যমে রমজান খানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্য এককভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। চড়েন দামি বিলাসবহুল গাড়ীতে। যা সম্পূর্নরুপে দুদক চোখের আড়ালে। তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের ঘুষ না দিলে এই অফিসে একটি দলিলও নিবন্ধন হয় না। তার আঙ্গু হেলনে চলেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। অভিযোগকারী ছগির হোসেন লিখিত অভিযোগে আরো বলেন, মুন্সিগঞ্জ জেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেজিস্ট্রার রমজান খানের বিরুদ্ধে আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের উচ্চপর্যয় কর্মকর্তারা তদন্ত করলে তার সবকিছু বেরিয়ে আসবে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমার আবেদন রমজান খানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে আইনে আওতায় এনে বিচার করা হোক। তাতে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উপকৃত হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *