উপাচার্যের পদত্যাগ ঠেকাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

খুলনা সংবাদদাতা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেনের পদত্যাগ ঠেকাতে শিক্ষার্থীরা রোববার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন। উপাচার্যের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় উপাচার্য মাহমুদ হোসেন তাঁদের পাশে ছিলেন এবং আন্দোলনের সময় তিনি ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করতে দেননি। উপাচার্যের বক্তব্য, “আমার ক্যাম্পাসে কোনো পুলিশ প্রশাসন ঢুকতে পারবে না; এখানে আমিই প্রশাসন,” সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে তাঁকে পদত্যাগ না করার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, উপাচার্য পদত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেবেন না। দীর্ঘ সময় ধরে বিক্ষোভ চলার পর, উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনের নিচে নেমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জহুরুল তানভীর বলেন, “আমাদের একটাই দাবি, উপাচার্য স্যারের পদত্যাগ কোনো অবস্থাতেই মেনে নেব না। স্যার আমাদের পাশে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন, আমরা তাঁর পাশে আছি।” তিনি আরও বলেন, উপাচার্যের ওপর যদি কোনো চাপ থাকে, তা শিক্ষার্থীরা প্রতিহত করবে এবং রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যাতে তিনি বিষয়টি সমাধানে পদক্ষেপ নেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য মাহমুদ হোসেন বলেন, “তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জীবনের একটি বড় প্রাপ্তি। আমাকে আরও একটু ভাবার সময় দাও।” তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজ একটি টিমের মাধ্যমে হয়। আমি বিষয়টি নিয়ে আমার টিমের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। যতক্ষণ আছি, ততক্ষণ আছি।”

পরে উপাচার্য তাঁর দপ্তরে ফিরে গিয়ে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুসসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের দপ্তরের বাইরে অবস্থান করছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *