আত্মসমর্পণের পর কারাগারে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দ্বায়ের করা মামলায় “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সাত বছরের সশ্রম কারাদÐ দেন আদালত । ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান ন‚রের আদালত মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের পৃথক দুই ধারায় এ কারাদÐ দেন । রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ মামলায় আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান । পরে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন । একই সঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার আদেশও দিয়েছেন আদালত। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারের দিকে নেওয়া হয় । আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার আমেরিকার একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানের নামে সাজানো মামলা করে। পরে তার অবর্তমানে সাত বছরের কারাদÐ দেয় বিচারক। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে এ রায় দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি । তিনি আরও বলেন, আমরা তার জামিনের আবেদন করিনি। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা তাকে কারাগারে পাঠানোর কথাই বলেছি। জানা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান ন‚রের আদালত মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁজজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদÐ দেন । দÐপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন-জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া । আসামিদের দÐবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদÐ ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদÐ দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এ ছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধম‚লক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদÐ ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে–আরও এক মাসের কারাদÐ দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন । মামলার অভিযোগ বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এপর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন । শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরেছিলেন মাহমুদুর রহমান। এক সময় বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিএনপি সরকারে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এসব দায়িত্ব পালন শেষে মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকতায় নিজেকে যুক্ত করেন। দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিগত সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের বিরুদ্ধে— আমার দেশ পত্রিকায় লেখনির কারণে মাহমুদুর রহমানকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্মম নির্যাতন করা হয়। তিনি বিগত সরকারের সব অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ও আপোষহীন ছিলেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *