নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য একটি যৌথ অভিযান শুরু করবে। আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
নতুন সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সারা দেশে হত্যা, নির্যাতন, গুম, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মামলা বেড়েছে। যদিও মামলা হচ্ছে দ্রুত, গ্রেপ্তারের সংখ্যা খুবই কম। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনার কোনো পরিকল্পনা নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য গণগ্রেপ্তার এড়ানো এবং মানুষের হয়রানি কমানো।
পুলিশ পুনর্গঠনের পর সুনির্দিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযানে প্রাধান্য দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীলরা জানান, মামলার আসামিরা এজাহারে উল্লেখিত থাকলেও গ্রেপ্তারের বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রয়োজন অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “হাজার হাজার মানুষ গ্রেপ্তার করে লাভ নেই; মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে। অপরাধী বিচারের মুখোমুখি না হলে সংস্কৃতি পরিবর্তন হবে না।” তিনি উল্লেখ করেন, প্রমাণসহ অপরাধীদের সনাক্ত করা হয়েছে এবং নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।
এদিকে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত শতাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ সকল মামলা গুম ও হত্যা নিয়ে। প্রথম মামলা ১৩ আগস্ট, এবং শততম মামলা ২৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা হয়। মোট ১০১টি হত্যা মামলা ছাড়াও অপহরণ ও গুমের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মন্তব্য করতে রাজি হননি, জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করার সময় হয়নি।
র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মুনিম ফেরদৌস ‘আজকের পত্রিকা’কে জানিয়েছেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করতে র্যাব প্রস্তুত। ইতিমধ্যে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গ্রেপ্তার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে, যৌথ অভিযানে র্যাব অংশ নেবে কিনা তা নিশ্চিত করা হয়নি; র্যাব আইন অনুযায়ী স্বতন্ত্রভাবে কাজ করবে।
এছাড়া, পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অন্তর্ভুক্ত। গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলও।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, “দেশ একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে মামলার তদন্ত ও গ্রেপ্তারের কার্যক্রমও সঠিক পথে আসবে। এ জন্য আমাদের কার্যক্রম চলছে।”