আ.লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের আস্থাভাজন দুর্নীতিবাজ গাজীপুর বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শক সুমন এখনও স্বপদে বহাল !

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) গাজীপুর সার্কেলর মোটরযান পরিদর্শক সাইদুল ইসলাম সুমন অবৈধভাবে ঘুষ দুর্নীতি ও বিভিন্ন তদবির করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের হয়রানির বিভিন্ন ধরনের একাধিক অভিযোগ এবং আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক দুর্নীতি ও অপকর্ম করে অটেল সম্পদের মালিক হন সাইদুল ইসলাম সুমন। এক কথায় বলা যায় গাজীপুর বিআরটিএ সুমনের ছত্রছায়া গোটা বিআরটিএটি নিয়ন্ত্রণ করছে দালালরা।

দালাল নিয়ন্ত্রণ করে ও সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দুর্নীতিবাজ সুমন। বিআরটিএ থেকে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও তদবির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে সুমনের বিরুদ্ধে। পিরোজপুর জেলা সদর ছোট মাছুয়া গ্রামের আলতাফ হোসেন আখনের ছেলে।

আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম সহ বিভিন্ন মন্ত্রীর ও নেতাদের ক্ষমতা দেখি চাকরি শুরু থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত ক্ষমতা অপব্যবহার করে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এমনকি গাজীপুর বিআরটিএ র শ্রমিকলীগের নেতাদের সঙ্গে যুগসাজে একের পর এক অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম ও দুর্নীতি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সুমন। বিআরটিএ সবাই তাকে এক নামে চেনে তদবিরবাজ সুমন।

একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি, ঘুষ-বানিজ্য মাধ্যমে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন মোটরযান পরিদর্শক সাইদুল ইসলাম সুমন। মটরযান পরিদর্শক সুমন বিআরটিএ এর দালালের মাধ্যমে নিয়মিত অবৈধভাবে টাকার বিনিময়ে বিআরটিএ এব পরীক্ষা ছাড়াই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গাড়ীর লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিয়ে অবৈধভাবে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। অবৈধভাবে দুর্নীতি ঘুষ বাণিজ্য এবং দালালদের মাধ্যমে গ্রাহক হয়রানি ও অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ফকির হাসান মোল্লা।

লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে জানা গেছে, মোটরযান পরিদর্শক সুমন, বিআরটিএ কর্মরত আছেন। তিনি বর্তমানে বিআরটিএ সব কাজের জন্য প্রতিনিয়ত দালালের মাধ্যমে পরীক্ষা ছাড়াই ঘুষের টাকা বিনিময়ে লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিয়ে থাকেন। তিনি বিআরটিএতে কয়েক ডজন দালালের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে মোটা অংকের ঘুষের টাকার নিয়ে থাকেন বলে সংশ্লিষ্ট অফিসের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাধিক অভিযোগ রয়েছে । টাকার বিনিময়ে প্রতিটি লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে থাকেন এমনকি সব ধরনের কাজ করান দালালের মাধ্যমে। প্রতিটি গাড়ীর লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিতে সর্বনিম্ন ৩ হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন। তার কয়েকজন সহকারীরা এইসব বিষয়ে তাকে সহযোগিতা করে থাকেন। তার নিয়োজিত দালালের মাধ্যমে নিয়মিত গ্রাহকের নিকট থেকে টাকা আদায় করে থাকেন ।

সুমনের অপকর্ম-দুর্নীতির এই বিষয়ে একাধিক অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে প্রতিবেদকের কাছে। লিখিত অভিযোগে আরও জানা যায়, সাইদুল ইসলাম সুমনের জন্ম ১০/১২/১৯৬১ইং, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ১৯৮৩৬০৪৩৬১ টিআইএন নং- ৬৯৭৪৫৮৯০০৬৩৬, কর সার্কেল- ৩৬, কর অঞ্চল- ০২, ঢাকা। অভিযোগে আরো জানা গেছে, বর্তমানে খিলগাঁও দক্ষিণ গোড়ান ২৬১/১ নাম্বার বাসাটিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সুমন উক্ত বাসাটি কয়েক কোটি টাকার ব্যয়ে ষষ্ঠ তলা ভবনটি নির্মাণ করছেন। তিনি খিলগাঁও বাসাবো নন্দীপাড়ার দুই নাম্বার স্কুল রোডে ৩১ নাম্বার বাসার তৃতীয় ও চতুর্থ তলার দুইটি ফ্লোর ক্রয় করেছেন। এছাড়াও গাজীপুর, ঢাকার আশপাশে অনেক জমি ক্রয় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি নিজ গ্রামের বাড়িতে জায়গা জমি নামে বেনামী ক্রয় করেছেন। তার এই টাকার উপার্জনের উৎস হলো গাজীপুর সার্কেলের বিআরটিএতে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ বিআরটিএ সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের পরিচয় দিয়ে নিজে এবং তার দালাল বাহিনী দিয়ে গ্রাহকদের নিকট ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিনিয়তই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের দোসর ও বিআরটিএ এর প্রভাবশালী মটরযান পরিদর্শক সুমন এখনও তার স্বপদে বহাল রয়েছেন। তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো বিআরটিএতে কোনো কর্তৃপক্ষ নেই বলে তিনি সবার কাছে বলে বেড়ান। তার অবৈধ ক্ষমতার প্রভাবে বিআরটিএ মোটরযানের বিভিন্ন বিভাগ বর্তমানে ধ্বংঘের দারপ্রান্তে। তার বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিআরটিএ এর গ্রাহকগণ খুবই উপকৃত হবে। মটর শ্রমিকের নেতাদের সঙ্গে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পরিবহন অংশীদারীতে গাড়ীর ব্যবসা করেন সুমন। বিআরটিএ তে চাকুরী করার সুবাদে তিনি এই সুবিধা গ্রহণ করছেন। তার বিষয়ে তদন্ত করলে আরও অসংখ্য তথ্য পাওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা বিআরটিএকে দুর্নীতি বাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যেই হোক দুর্নীতি প্রমাণ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অনেক অভিযোগ আমরা শুনেছি। আমাদের কাছে কেউ যদি দেখি তো অভিযোগ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগকারী আরও বলেন, উপরোক্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপদেষ্টা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *