নিজস্ব প্রতিবেদক : বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩, ডিয়াবাড়ি,উত্তরা- ঢাকা এর ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন শাখায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের হাতিয়ার। এই সিন্ডিকেটেরা মনে করেন বিআরটিএ’র সরকারি চাকুরি যেন সোনার হরিণ। একবার চাকুরিতে ঢুকতে পারলে তার পরিবর্তন হতে বেশি দেরি লাগে না। যেমন সহকারী পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশনের কাজ চালাচ্ছেন দেদারসে। তার এই সিন্ডিকেটের সাথে কর্মকর্তা ও দালালরা নিয়োজিত রয়েছেন।
অন্য কর্মকর্তারা হলেন মটরযান পরিদর্শক কায়সা আলম ও সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাসসহ আরো অনেকেই। এক চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করছেন দুটি একটি হলো ফিটনেস এবং অন্যটি হলো মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন। তিনি আগে মোটরযান পরিদর্শক হিসেবে চাকুরি করতেন। পরবর্তীতে প্রমোশন পেয়ে সহকারী পরিচালক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেন। তার চাকুরি শুরু থেকে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন আরো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হরিলুটের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন সহকারি পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদ। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ও দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ থাকলো সেগুলো ধামাচাপা দিয়ে তাদের সিন্ডিকেটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সুনীল ও কায়সারের বিরুদ্ধে দুদুক। তাদের অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে না এবং আলোর মুখ দেখছে না! বশির উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘ দিন যাবত এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল- ৩ এ। পাশাপাশি বিআরটিএ ঘুষ দুর্নীতির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি ঘুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সরেজমিনে প্রতিবেদন সংগ্রহকালে সহকারী পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদের ঘুষ বাণিজ্যের তথ্যচিত্র পাওয়া গেছে। তিনি সিন্ডিকেট গড়ে ঘুষ বাণিজ্য এবং অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন গ্রাহকদের কাছ থেকে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩, ডিয়াবাড়ি, উত্তরাতে মোটরযানের ফিটনেস করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি বলেন, এক হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। কিভাবে লেনদেন করেন বা কার সাথে কথা বলবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, যারা মাঠে গাড়ির নাম্বার ট্র্যাক করেন তাদের সাথে কথা বললেই ব্যবস্থা করে দিবেন। এছাড়াও তাদের নিয়োজিত অনেক দালাল আশপাশে ঘোরাফেরা করে খোঁজ করলে পাবেন।
তারা আরও বলেন, সহকারী পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব পালন করছেন ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন শাখা। এজন্যই বশির উদ্দিন আহমেদের চারপাশ ঘিরে সর্বত্রই অফিস চলাকালীন সময়ে বড় একটি দালাল সিন্ডিকেট কাজ করছে । আর দিনশেষে ওরাই গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া ঘুষের টাকা বশির উদ্দিন আহমেদকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই চলছে দিনের পর দিন বশির উদ্দিন আহমেদসহ সিন্ডিকেটের ঘুষ বানিজ্য। আর এসব ঘুষের টাকা প্রতিনিয়ত লেনদেন হচ্ছে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিও সিন্ডিকেটের সদস্যদে মাধ্যমে। দুর্নীতগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ , গ্রাহকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এমন খবর সহসাই বিভিন্ন গ্রাহকরা ভুক্তভোগী হলো তারা মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছেন না তারা মনে করেন আমাদের গাড়ির কাজটি না যদি হয়। এইসব দুর্নীতির ঘটনা একের পর এক হতেই চলছে যেন দেখার কেউ নেই !
কথিত আছে লক্কর ঝক্কর গাড়ির ফিটনেস এর জন্য নীরব অভয়ারণ্য এখন ডিয়াবাড়ি বিআরটিএ। কেননা উত্তরা বিআরটিএ ফিটনেস শাখার যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি একজন শান্ত স্বভাবের মানুষ। তিনি নিজেকে জমিদার পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। চাকরির সুবাদে একের পর এক দুর্নীতি ও অপকর্ঘুমের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন সহকারি পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদ। এমনকি সিন্ডিকেট গড়ে অবৈধভাবে ঘুষের বিনিময়ে ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন এর কাজ করে দেন। ঘুষের বিনিময়ে পাওয়া যায় অতি সহজে এমন খবর গাড়ি মালিক এবং দালাল উভয়ই খুব ভাল জানেন তাই তারা গাড়ির ফিটনেস করার আগে বোঝে শুনে এপয়েনমেন্ট করেন, যাতে করে ফিটনেস পেতে কোন ঝামেলা পোহাতে না হয়। কিন্তু কোন কোন গ্রাহক সহকারি পরিচালককে দুর্নীতির নীরব ঘাতক হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, এমন দুর্নীতিবাজ অফিসার ঢাকার উত্তরা বিআরটিএরঅফিসে না থাকাই ভালো। বশির উদ্দিন আহমেদের হাত ধরে অনেক দালাল আজ কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। অনেকেই আবার ফ্ল্যাট, প্লট ও গাড়ির মালিক হয়েছেন। বি আর টি এ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-৩, ডিয়াবাড়ি, উত্তরা এর ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন শাখার ঘুষ বানিজ্যের অন্যতম হোতা বশির উদ্দিন আহমেদ। সাভার ও ঢাকাতে তার নিজ নামে গাড়ি, বাড়ি ও সম্পদের খোঁজ মিলেছে। বিগত আওয়ামী সরকারের সাথে সখ্যতা করে ঢাকা মেট্রো সার্কেল -১ এ দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আর সেই সুযোগে শুধুমাত্র ড্রাইভিং লাইসেন্স শাখা থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা।
বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো- ৩, উত্তরা, ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন শাখার দায়িত্বরত সহকারী পরিচালক বসির উদ্দিন আহমেদ, মোটরযান পরিদর্শক কায়সার আলম, সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাসসহ আরো অনেকে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে পরিত্যক্ত গাড়ী ও ফিটনেস বিহীন গাড়ী ঘুষ বাণিজ্য বিনিময় হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ফিটনেস বিহীন ও পরিত্যক্ত গাড়ী সনদ ইস্যু রমরমা বাণিজ্য চলমান এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন চলতি বছরের মার্চ মাসে সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয়ের বরাবরে মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইনে। তার অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, মটরযান পরিদর্শক কায়সার আলম, সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাসসহ আরো অনেক কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে সহাকরী পরিচালক বসির উদ্দিন আহমেদ ঠান্ডা মাথায় প্রতিদিন দালাল এর মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধ ভাবে গাড়ীর ফিটনেস দিয়ে বৈধ করে দিচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে । মানুষের জীবনের হুমকি ও প্রাণ হানী সৃষ্টি করছেন। এমনকি রাস্তায় অবৈধ গাড়ী চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি মূলত নির্ভরশীল মটরযান পরিদর্শক কায়সার আলম ও সুনীল চন্দ্র দাস সহ আরো অনেক কর্মকর্তা নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা সহকারী পরিচালক বসির উদ্দিন আহমেদের অনুপ্রেরনায় গোপনে দালাল হোসেন, দালাল মিজান, দালাল বাবুল, দালাল জনি, দালাল আকরাম, দালাল বাবু, দালাল রাসেল সহ আরো অনেক দালাল এর সহযোগীতায় গাড়ী ফিটনেস দেওয়ার পূর্বেই তিনি ঘুষের টাকা বুঝে নিয়ে গাড়ী পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে ফিটনেস ইস্যু করে থাকেন। ফিটনেস বিহীন ও পরিত্যাক্ত এবং আনসিন গাড়ী ফিটনেস দিতে গাড়ী প্রতি সর্ব নিম্ন ৩০০০ হাজার থেকে সবোচ্চ ৫০০০ হাজার টাকা দালাল এর মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে থাকেন। তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা এত বেপরোয়াড় হয়ে গেছেন যে সহকারি পরিচালক কে টাকা ছাড়া কোন ফিটনেস সনদ এ স্বাক্ষর করতে দেন না। তিনি গ্রাহকদের হয়রানি করার জন্য দালাদের লেলিয়ে দিয়েছেন।
তার ফিটনেস দেওয়ার গাড়ীগুলোর তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো। ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-০৪২২, ঢাকা মেট্রো-ড-১১-৯৮১৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৪৫৬৯, ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৮২২৯, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৫৩৯৩, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-১২৬৮, ঢাকা মেট্রো-ড-১২-২২৩১, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-০১২৫, ঢাকা মেট্রো-ট-১২-৭২৬৪, ঢাকা মেট্রো-ট-২০-১৫৪৬, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৫২৩৯, ঢাকা মেট্রো-ড-১১-৫২৬১, ঢাকা মেট্রো-স-১১-০৬৯২, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৬৪০৩, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৯৮৭৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৩০১৫, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৯৬৫০, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৬৫১৩, ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪৮১৬, ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৬৪২৬, ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৬৭২৪, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৬৭০৮, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৬৭০৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৫১৮৪, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-১২৫৯, ঢাকা মেট্রো-ড-১২-১৬১৯, ঢাকা মেট্রো-ট-১১-০৫৭৬, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৫০৪৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৪৯০২, ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৮০৬১, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-০০৩৪, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৯০৯৬, ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-৪৯৮৫, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৪০৪৩, ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৪৫০৩, ঢাকা মেট্রো-ট-২০-২৮৯৩, ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-৫২৩৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-১০১২, ঢাকা মেট্রো-ম-১১-২০৯৯, ঢাকা মেট্রো-ম-১১-৩৩৩০, ঢাকা মেট্রো-অ-১১-০০৩৩, ঢাকা মেট্রো-গ-২২-৯০০৪।
উপরোক্ত গাড়ীগুলো চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ফিটনেস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে। তারা দিন শেষে দালালদের নিকট ঘুষের টাকার সিরিয়াল অনুযায়ী বুঝিয়ে নেন। তাদের বিষয়ে ইতিপূর্বে কয়েকটি অভিযোগ সংশ্লিস্ট কয়েকটি দপ্তরে জমা পড়লেও তা কোন সময় তদন্ত করা হয়নি এমনকি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দপ্তরের তাদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন। তাদের দুর্নীতি অপকর্কমের কথা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জেনেও না জানার ভান করে বসে আছেন।
ভুক্তভোগী আবুল হোসেন, আব্দুল কাদের, ও আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আরো কয়েকজন গ্রাহক তাদের ভোগান্তির কথা এই প্রতিবেদককে জানান। এ ব্যাপারে সহকারী পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন আমি এইসব কাজে জড়িত নই। আমি মোবাইলে বেশি বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না । এ ব্যাপারে বিআরটিএর ঢাকা বিভাগীয় সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যারা বিআরটিএতে দুর্নীতি অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ আসলে তা আমরা তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগকারী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে গ্রাহকদের হয়রানি করার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের কে বিশেষভাবে আহবান করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলেন, দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সহকারী পরিচালক বশির উদ্দিন আহমেদ , মোটরযান পরিদর্শক কায়সার আলম ও সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র দাসসহ তাদের সিন্ডিকেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো- ৩ থেকে অপসরাণসহ শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যানের কাছে আমাদের জোরালো আবেদন ।