আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটার উপজেলার গুয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ফের যুমনা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। গত তিন দশকে ১৬ বার বিদ্যালয়টির স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে।
জানা গেছে,সাঘাটা উপজেলার গুয়াবাড়ী চরে অবস্থিত গুয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একটি প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।এই বিদ্যালয়টি থেকে শিক্ষার্থীরা পাশ করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারি চাকুরীর করছেন। তবে অব্যাহত নদীভাঙ্গনের কবলে পড়ে বিদ্যালয়টি সুনাম হারিয়ে ফেলছে।
কিন্তু গত তিন দশকে বিদ্যালয়টি ১৫ বার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে স্থানান্তরিত করতে হয়েছে। ফের ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদ্যালয়টির আসবাবপত্র ও টিনের ঘর। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান।
এই চরের বাসিন্দা মির্জা রফিকুল জানান,“চরের এই বিদ্যালয়টি স্থাপনের পাঁচ বছরের মধ্যে ফের সড়াতে হচ্ছে। এতে করে পাশের একটি চরে যেখানে খুব বেশি বসতি ও শিক্ষার্থী নেই”। একারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হবে।
অভিভাবক আবু সাঈদ জানান,“এমনিতে বন্যা ও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে চরে শিশুরা পড়ালেখায় পিছিয়ে,আবার কিছু দিন পরপর নদী-ভাঙ্গন হয়,এতে করে সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করানো কঠিন হয়ে পড়ে।” নুর ইসলাম প্রামানিক বলেন,“স্কুলের সাথে মানুষজনকেও বিভিন্ন স্থানে চলে যেতে হয়,এতে করে সন্তানদের ঐ স্কুলে পড়ালেখা করানো সহজ হয় না এবং বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়ে”।
এই বিদ্যালয়টির পূর্বের প্রধান শিক্ষক সুলতান আহম্মেদ জানান,“চলতি বছরেই তিনবার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে বিদ্যালয়টি।গত ত্রিশ বছরের অন্ততপক্ষে ১৫ বার টানাটানি করতে হয়েছে। সম্প্রতি নদীভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে, একারণে অঞ্চলের ভূমিগুলো স্থায়ী না হওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর স্থায়ীত্বও ঝুঁকিতে পড়েছে”।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক তৌফিকুল ইসলাম জানান,“নদী ভাঙ্গনের কারণে আপাতত বিদ্যালয়ের ঘর ও অন্যান্য উপকরণ অন্য চরে অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ক্লাস বন্ধ ঘোষনা না করা হলেও কয়েকদিন ক্লাস নেওয়া কঠিন হবে,তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুতই পাঠদানের পরিবেশ তৈরি করা হবে বলে তিনি বলেন”।
গুয়াবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ চরাঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যা,নদী ভাঙ্গনসহ নানান প্রতিকূলতার মাঝে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছে। তাই এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।