বিশেষ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিএনপি সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। সারাদেশে সংঘটিত নৈরাজ্য, হামলা, অগ্নিসংযোগ, দখল, এবং চাঁদাবাজির ঘটনাগুলো থেকে নিজেদের দূরে রাখতে বিএনপির শীর্ষ নেতারা নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে দলটি। একই সঙ্গে থানাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে রাতদিন পাহারা বসানো হয়েছে। নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো নেতাকর্মী যদি অপকর্মে জড়িত থাকে, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের দোসররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চায়। তারা সমাজে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চাইছে। তবে আমরা সতর্ক আছি এবং সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। দলের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি অপতৎপরতায় জড়িত হয়, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নেওয়া হবে।”
জানা গেছে, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনের শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরও অনেককে শোকজ করা হয়েছে। এই কঠোর বার্তা দলীয় তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দলের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, এবং যে কোনো নৈরাজ্য প্রতিহত করুন। কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয় এবং প্রতিহিংসায় লিপ্ত না হয়।”
এদিকে, সারাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা রুখতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় তারা পাহারা দিচ্ছেন। বিএনপির একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন যে, ছাত্র-জনতার বিজয়কে বিতর্কিত করতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তবে এবার দলের কঠোর অবস্থানের কারণে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, জমিজমা, হাটবাজার, এবং অন্যান্য স্থানে কোনো ধরনের দখল বা অপকর্মের অভিযোগ উঠলেই সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বরিশাল, খুলনা, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার এবং শোকজের ঘটনা ঘটেছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তারা সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কোনো ধরনের নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না, এবং যে কোনো ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।