বাগেরহাটে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ..

বাগেরহাট চিতলমারী : উপজেলার পুরাতন কালশিরার সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার শিকদারকে ঘিরে সম্প্রতি নানা বিতর্ক ও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা ও রাজনীতির দ্বৈত পরিচয়ে তিনি শুধু একজন শিক্ষক নয়—চিতলমারী উপজেলা তাঁতী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এবং স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছে।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নির্মল কুমার শিকদারের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় টিকে থাকতে তিনি বিএনপি ঘনিষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং আর্থিক অনুদান দিয়ে আওয়ামী কিছু নেতাকর্মীকে বিএনপির পদে স্থান করে দিতে সহযোগিতা করেছে।

জানা গেছে ৫ নম্বর সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিন্নাত শেখ ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মাধ্যমে তিনি পুনরায় উপজেলায় সক্রিয় হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রের মাধ্যমে আরো জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। যোগ্যতার চেয়ে আর্থিক লেনদেন বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে এবং অল্প সময়ের ব্যবধানে কোটিপতি বনে যান। দেশে-বিদেশেও সম্পদ রয়েছে তার।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, নির্মল কুমার শিকদার ও তাঁর পরিবারের নামে দেশে এবং ভারতের কয়েকটি স্থানে বাড়ি রয়েছে। তাঁদের নামে থাকা জমিসহ অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে এই সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে সে প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।

এছাড়াও, অভিযোগ রয়েছে তিনি প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে প্রভাব খাটিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে আসছেন। এমনকি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও প্রভাব ধরে রাখতে একটি অঘোষিত শক্তিশালী চক্র বা সন্ত্রাসী গ্রুপ পরিচালনার কথাও শোনা যায়।

বিষয়টি নিয়ে নির্মল কুমার শিকদারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে স্থানীয়দের জোরালো দাবি, এই সকল অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি যাতে শিক্ষা, প্রশাসন ও রাজনীতির মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

জনমনে প্রশ্ন—একজন শিক্ষক, যিনি শিশু-কিশোরদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বে, তিনি যদি নিজেই দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত হন, তবে সমাজের ভবিষ্যৎ কীভাবে নিরাপদ থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com