থানায় অভিযোগ দিয়েও বিচার পায়নি…অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা

রাকিবুল হাসান, শ্রীপুর, গাজীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুরে উর্মি আক্তার (১৮) এসএসসি পরীক্ষার্থী যুবতীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ ২৫-০৩-২৫ রোজ মঙ্গলবার। মোবাইল চুরির অপদস্থ অপমান ও শারিরীক নির্যাতন ও লোকলজ্জায় ওই যুবতী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তার উর্মির পরিবারের।

মঙ্গলবার (২৫মার্চ) দুপুরের দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা নামা পাড়া গ্রামের নয়াপাড়া গ্রাম থেকে পুলিশ পরীক্ষার্থী উর্মী আক্তারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছেন। নিহত উর্মি আক্তার (১৮) ওই গ্রামের মীর হোসেনের মেয়ে। সে কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী উচ্চবিদ্যালয়ের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। এঘটনায় নিহতের মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলো ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে রাজীব প্রধান (৩৫), তার স্ত্রী আঞ্জুমানারা শিখা (৫৫), মেয়ে রেনিয়া আক্তার (৩২), মনি আক্তার (২৮) ও পুত্রবধু মুসলিমা আক্তার (২৫)।

জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে উর্মি আক্তার বাড়ীর লোকদের অজান্তে ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে।খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদরেন্তর জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

নিহতের মা অভিযোগ করে বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে অভিযুক্তরা আমার বাড়িতে গিয়ে ঘর ঢুকে তছনছ্ করে। মোবাইল চুরির অপবাদে আমার মেয়েকে উর্মিকে মারপিট করে। চুল ধরে টানা হ্যাঁছড়া করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।

আমরা তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলার স্কাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাই। ঐদিন সকাল দশটার দিকে অভিযুক্তরা আমার ছেলে মুরাদকে মোবাইল চুরির অপবাদে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পুলিশ তাকে একটি মামলায় আদালতে সোপর্দ করে। এক মাস হাজতবাস করে আমার ছেলে জামিনে আসে।

তিনি বলেন,আমার মেয়েকে মারপিটের বিষয়ে ওই দিনই থানায় অভিযোগ করি। ঘটনার এক মাস পার হলেও পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করেনি,এবং এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু অভিযুক্তরা সোমবার (২৪মার্চ) বিকেলে আমার মেয়েকে গালিগালাজ করে খুন জখমের হুমকি দেয়। কোন বিচার না পাওয়ায় রাতে প্রবাসী স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। অভিযুক্তদের হুমকির মুখে থানায় অভিযোগ করে বিচার না পাওয়ায় ঘৃণা লজ্জায় আমার মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, বাদীর মেয়েকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে বাদীকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে আমাকে কোন কিছু জানায়নি।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে তদন্ত করে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *