চ্যানেল7বিডি ডেক্স: আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসে লোডশেডিং শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে, জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ চাহিদা ও সরবরাহ পরিকল্পনা
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) পূর্বাভাস অনুযায়ী, এপ্রিল-মে মাসে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ১৮,০০০ মেগাওয়াট হতে পারে, যেখানে সন্ধ্যার পিক আওয়ারে ১৭,২৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিপিডিবির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম জানিয়েছেন, রমজান মাসে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫,৭০০ মেগাওয়াট হতে পারে এবং এই সময় লোডশেডিং শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১৭,৮০০ মেগাওয়াট, কিন্তু উৎপাদন হয়েছিল ১৬,৪৭৭ মেগাওয়াট। গ্রীষ্মকালে ৭৪০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হতে পারে, তবে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত জ্বালানি সরবরাহের পরিকল্পনা করছে।
গ্যাস ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস সরবরাহ বাড়িয়ে দৈনিক ১,২০০ এমএমসিএফডি করা হবে, যা বর্তমানে ৯০০ এমএমসিএফডি।
কোন উৎস থেকে কত বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা?
বিপিডিবির পরিকল্পনা অনুসারে, এপ্রিল-মে মাসে বিভিন্ন উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে—
✅ গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র: ৬,২০০ মেগাওয়াট
✅ কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র: ৫,১০০ মেগাওয়াট
✅ ভারী জ্বালানি তেল (এইচএফও) কেন্দ্র: ৩,৫০০ মেগাওয়াট
✅ জলবিদ্যুৎ: ৪০ মেগাওয়াট
✅ সৌর ও বায়ু: ২০ মেগাওয়াট
✅ বিদেশ থেকে আমদানি: ১,০০০ মেগাওয়াট
✅ আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র: ১,৪০০ মেগাওয়াট
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা
পায়রা: ১,২০০ মেগাওয়াট
রামপাল: ১,০০০ মেগাওয়াট
এসএস পাওয়ার: ১,২০০ মেগাওয়াট
মাতারবাড়ি: ১,১৫০ মেগাওয়াট
বরিশাল: ৩০০ মেগাওয়াট
বড়পুকুরিয়া: ২৫০ মেগাওয়াট
সরকারের অর্থায়ন ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিপিডিবি অর্থ বিভাগ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছে, যা ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে।
কুলিং লোড কমিয়ে বিদ্যুৎ চাহিদা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা
গ্রীষ্মকালে এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের কারণে প্রায় ৬,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যয় হয়। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের মতে, সচেতন ব্যবহারের মাধ্যমে কুলিং লোড ২,০০০-৩,০০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত কমানো সম্ভব, যা বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় সাহায্য করবে।
তথ্যসূত্র: বাসস