নিউজ ডেক্স: যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার এবং তার আসন্ন প্রশাসনের উদ্যোগ ও চাপ ছাড়া ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি সম্ভব হতো না। চুক্তিটি কার্যকর হতে পারে আগামী রবিবার, যদি ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা তা অনুমোদন দেয়। এই চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি বন্দি ও ইসরায়েলি জিম্মি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া, পরবর্তীতে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা হবে।
ট্রাম্পের বক্তব্য
বৃহস্পতিবার ড্যান বোঙ্গিনো শো’তে ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফসহ আমাদের দলের চাপ ছাড়া এই আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া সম্ভব ছিল না। আমরা চুক্তির গতিপথ পরিবর্তন করেছি এবং তা দ্রুত সম্পন্ন করেছি।” তিনি আরও দাবি করেন, তার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া জিম্মিরা কখনো মুক্তি পেত না।
তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমালোচনা করে তাকে “অকৃতজ্ঞ” আখ্যা দেন। ট্রাম্প বলেন, “বাইডেন এই চুক্তিতে কোনো ভূমিকা রাখেননি। আমাদের প্রচেষ্টা ছাড়া এটি কখনো সম্ভব হতো না।”
যুদ্ধের পটভূমি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস হাজার হাজার রকেট ছোড়ে ইসরায়েলের দিকে। এতে প্রায় ১,৪০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যা অবরুদ্ধ অঞ্চলের ওপর আরও নিপীড়ন সৃষ্টি করে।
ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৬,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
চুক্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শুক্রবার চুক্তির শর্তাবলি নিয়ে বৈঠকে বসবে। যদি চুক্তি অনুমোদিত হয়, তবে সোমবার ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আগেই, রবিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
ট্রাম্পের এই দাবি তার দ্বিতীয় মেয়াদের অভিষেকের প্রাক্কালে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নির্ভর করবে চুক্তির শর্ত ও পক্ষগুলোর প্রতিশ্রুতির ওপর।