অনলাইন ডেক্স: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতি এত ব্যাপক যে গুম, খুন, ও লুটপাট করেও শেষ রক্ষা হয়নি। নিজেকে বাঁচাতে আপন (সালমান এফ রহমান) দাড়ি কামিয়েছেন। অহংকার পতনের মূল—এই কথাটি মনে রাখা জরুরি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডা. জাহিদ।
তিনি বলেন, “যারা নেদারল্যান্ড বা কলকাতা গেছেন কিংবা দ্রুত অন্য কোথাও চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি—সৎ সাহস থাকলে দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রত্যেক কাজের জবাবদিহি করতে হবে।”
৩১ দফা ও জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে
ডা. জাহিদ আরও বলেন, “আমরা রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। দেশের অবস্থা বিবেচনায় অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা জরুরি। এরশাদের পতনের সময় কত দ্রুত নির্বাচন হয়েছিল, তা জনগণ মনে রেখেছে। তবে বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করায় এই প্রক্রিয়া জটিল হয়েছে। তারপরও রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।”
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সব সংস্কার আপনারা করতে পারবেন না, কিন্তু অন্তত নির্বাচন আয়োজনের সময় স্পষ্ট করুন। প্রধান উপদেষ্টা একরকম বলেন, আর তার প্রেস সচিব আরেক রকম কথা বলেন। এভাবে বিভ্রান্তি ছড়ালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
জনগণের দুর্ভোগ ও বর্তমান অবস্থা
তিনি বলেন, “মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা। স্বৈরাচার সরকারের প্রেত্মাত্মারা এখনো সক্রিয়। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের ভেতরে ও বাইরে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।”
সভাপতির বক্তব্য
জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের স্বাধীনতার গৌরব ছিনিয়ে নিতে চায়। বাংলাদেশ অসংখ্য শহীদের রক্তে অর্জিত। আমরা নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, তা কেউ বিনষ্ট করতে পারবে না। ভবিষ্যতেও এই ঐক্য বজায় রেখে যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করা হবে।”
অন্যান্য বক্তাদের মতামত
সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, “নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত।”
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। কেউ যদি ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র করে ‘কিংস পার্টি’ গঠনের চেষ্টা করেন, তবে তারা ভুল করছেন। আমরা রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাব।”