নেত্রকোণায় সানোয়র হত্যা না আত্নহত্যা; থানায় নেয়নি মামলা

গজনবী বিপ্লব, নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণার খালিয়াজুরি উপজেলার খালিয়াজুরি গ্রামের মোঃ জমসের মিয়ার ছেলে সানোয়ের মৃত্যু হত্যা না আত্নহত্যা এ নিয়ে পরিবারের মাঝে চলছে সন্দেহ। প্রথমে আত্নহত্যা করেছে বলে ধারণার পর পরিবারের পক্ষ থেকে কোন আপত্তি না থাকায় মৃত সানোয়ারকে  ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন কারা হয়। পরবর্তিতে মোবাইল ফোনে একটি এস, এম, এস দেখে পরিবারের লোকজনের মাঝে সনোদহের দানা বাধেঁ।
গত ৭ ডিসেম্বর ২০২৪  মৃত সানোয়ারের ভাই মোঃ দেলুয়ার হোসেন বাদি হয়ে খালিয়াজুরি থানায় একটি অভিযোগ পত্র নিয়ে গেলে খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন তা গ্রহণ না করে নেত্রকোণা আমলি আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরবর্তিতে মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে নেত্রকোণা আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর নেত্রকোণা আমলি আদালত ৮ ডিসেম¦র খালিয়াজুরি থানাকে এই মামলাটি এফআইআর হিসেবে গন্য করার জন্য নির্দেশ প্রদান করে।
আসামীগণ হলেন, )   মৃত আনুর ছেলে মোঃ ফারুখ বেপাড়ী (৩৮) মোৎ কালু মিয়া (২৮) মোঃ গাজি মিয়া (৩৩ । মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে হান্নন মিয়া (৪০) রুহুল আমীন (২৫) নূরুল আমীন ( ৩৭)। মৃত মফিজ আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০) তাদেও প্রত্যেকের বাড়ি, থান, খালিয়াজুরি।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয় যে, মৃত সানোয়ার ও তার ভাই মামলার বাদি দেলোয়ার একই ঘরে পৃথক  বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে খাওয়া দাওয়ার পর প্রত্যেকে নিজ রুমে ঘূমিয়ে পড়েন। সকাল ৬টার দিকে মামলার বাদি মাছ ধরার কাজে বেড়িয়ে পড়েন। বাড়িতে কান্নকাটি ও ডাক চিৎকারের শব্দ শুনিয়া দেলুয়ার বাড়িতে এসে দেখে তার ভাই সানোয়ার উত্তর শিরানায় শোয়ানো। আমি বাড়িতে আসার আগেই আসামীগণ আমার বাড়িতে অবস্থান করে। আমার ভাই বৌয়ের কাছে মৃত্যুও করণ জানতে চাইলে আসামীগণ আগ বাড়াইয়া অতি উৎসাহি হইয়া জানায় যে, আমার ভাই গলায় ফাঁস লাগাইয়া মুত্যু বরণ করেছে।  তারপর আমার ও আমার পরিবারের কোন আপত্তি না থাকায় থানায় আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই ধর্মী নিয়ম মেনে মৃতদেহ দাফন করি। পরবর্তিতে আমার ভাই বৌ মৃতকের স্ত্রী আমাদেরকে দেখায় যে, হাতার মোবাইল পোনে ঘটনার দিন রাতে একটা দশ মিনিটে আমার ভাই মৃতকের মোবাইল ফোন থেকে আমার ভাই বৌয়ের মোবাইলে একটি এসএমএস এসেছিল যে, আমার মৃত্যুর জন্য ফারুখ ব্যাপারী দায়ী।  আমরা ধারণা করি যে রুমটিতে আমার ভাই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্যহত্যা করেছে ও যে ধর্নায় আত্যহত্যার কথা বলা হয়েছে তা খুবই  দুর্বল এই ধর্নাটি একটি মানুষের ওজন বহন করতে সক্ষম না। তার বাচাঁর জন্য পায়ের তলায় চেয়ার টেবিল ছিল যা তার বাচাঁর অনলম্বন হিসেবে কাজ করত। আমার ধারণা আমার ভাই ফাঁস লাগাইয়া আত্ন হত্যা করতে পারে না।  আমার ভাই মৃত্যর আগে অভিযোক্ত ফারুখ ব্যাপারী মাছের আঁড়তে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করত। মৃত্যুও ২ দিন আগে ফারুখ ব্যাপারী ও উল্লেখিত আসামীরা আমার ভাইয়ের কাছে তিন লক্ষ টাকা পাবে বলিয়া চাপ প্রয়োগ করে। আমার ভাই ২দিন তাদের ভয়ে ভীত ছিল। মৃত্যুর আগেও আমার ভাইকে মারার জন্য ধাওয়া করে।  আমার ধারণা যে, উল্লেখিত আসামীরা আমার ভাইয়ের হত্যার সাথে সারাসরি জরিত রয়েছে। আমার ধারণা আমার ভাইকে আসামীরা রাতের আধাঁরে ঘরের ভিতরে শ^াস রুদ্ব করিয়া পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় এলাকাবাসী ও পুলিশের কাছে আত্ন হত্যা বলে চালিয়ে দেয়। আমার ভাইয়ে মৃতদেহ কবর থেকে উত্তেল করে পোষ্ট মর্টেম করলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

মামলার বাদি আরও জানান, আমি যখন অভিযোগটি নিয়ে খালিয়াজুরি থানায় যাই তখন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন অভিযোগটি গ্রহণ করতে রাজি হননি। তাই আমি আর কোন উপায় না পেয়ে আমার ভাইয়ের মৃত্যুও জন্য আদালতে মামলা করেছি। মামলা করার পর আমি ও আমার পরিবার আসামীদের প্রাণ নাশের হুমকিতে আছি।

খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ( ওসি ) মকবুল হোসেন জানান, আমরা যখন শুনতে পারি যে, থানার কাছেই সানোয়ার নামে একজন আত্যাগত্যা করেছে। তখন আমি আমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই, মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করি ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ পোষ্ট মর্টেমের জন্য প্রস্তুতি নিলে মৃত ব্যাক্তির পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ও এলাকাবাসীর সুপারিশে  আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষ পুলিশ সুপার স্যারের পরামর্শক্রমে ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ সৎকারের ব্যাবস্থার অনুমতি প্রাদান কারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *