অনলাইন ডেক্স: সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দেশটিকে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর রবিবার সকালে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এক টেলিগ্রাম পোস্টে এইচটিএস জানায়, “স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে এবং নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।” বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি আরও বলে, “অর্ধ শতাব্দীর স্বৈরশাসনের অবসানের ফলে বাস্তুচ্যুত এবং কারাবন্দি সিরিয়ানরা এখন ঘরে ফিরতে পারবেন। আমরা একটি নতুন সিরিয়ার স্বপ্ন দেখছি, যেখানে শান্তি ও ন্যায়বিচারের জয় হবে।”
বাশার আল-আসাদের পালানোর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিরিয়াজুড়ে বিদ্রোহীদের মধ্যে আনন্দ-উদযাপন শুরু হয়। যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, ভোরে দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত বিমান উড্ডয়ন করে, যা সম্ভবত আসাদকে বহন করছিল। সরকারি বাহিনীর বিদায়ী সংবর্ধনার মধ্যেই বিমানটি উড্ডয়ন করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা এরই মধ্যে হোমস শহর দখল করার পর বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছে। বিদ্রোহী নেতা মোহাম্মদ আল-জোলানি যোদ্ধাদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সদয় আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আপনারা যেসব শহর ও গ্রামে প্রবেশ করবেন, সেখানকার মানুষের প্রতি সদয় ও নম্র আচরণ করবেন।”
জোলানি আরও প্রতিশ্রুতি দেন যে যারা অস্ত্র সমর্পণ করবে, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হবে।
এদিকে ইরাকের সীমান্তবর্তী আল-কায়িম শহরের মেয়র জানিয়েছেন, সিরিয়ার প্রায় দুই হাজার সেনা সীমান্ত পার হয়ে ইরাকে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, দামেস্কের চারপাশ থেকে সরকারি বাহিনী পিছু হটার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ব ঘোউতার বিভিন্ন এলাকা থেকে সরকারি সেনা প্রত্যাহারের ফলে দামেস্কের বাজারগুলোতে খাদ্যপণ্য কিনতে মানুষের ঢল নেমেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের সংঘাতের একটি বড় মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।