আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ ছয় বছরে ১৯ হাজারের বেশি খুন

অনলাইন ডেক্স: ছয় বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ঢাকাসহ সারা দেশে খুন হয়েছেন ১৯ হাজার ৪০ জন। এর অর্থ, প্রতি মাসে গড়ে ২৮০ জন খুনের শিকার হয়েছেন। তবে গত জুলাই-আগস্ট মাসে খুনের সংখ্যা ছিল ব্যতিক্রমভাবে বেশি—মোট ৯৫২ জন।

পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি প্রকাশিত অপরাধ পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা অপরাধ পরিসংখ্যান গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে পুলিশ।

নবনিযুক্ত আইজিপি বাহারুল আলম ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। এরপর তার নির্দেশে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ বছর আট মাসের পরিসংখ্যান একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়।

পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে দেশে খুন হয়েছেন ১ হাজার ৫৩৩ জন। অর্থাৎ, প্রতি মাসে গড়ে ২৫৫ জন নিহত হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ড মূলত পারিবারিক, সন্ত্রাসী এবং দুর্বৃত্তদের হাতে ঘটেছে।

তবে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে খুনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫২ জনে, গড়ে প্রতি মাসে ৪৭৬ জন। এই সময়ের খুনের তালিকায় পারিবারিক ও সন্ত্রাসী ঘটনার পাশাপাশি গণআন্দোলনের কারণে নিহতের ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির তথ্যমতে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৮১ জন। যদিও পুলিশের পরিসংখ্যানে কেবল মামলা ভিত্তিক খুনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশের বক্তব্য

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জানান, পরিসংখ্যানে কেবল মামলার ভিত্তিতে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টে খুনের পরিসংখ্যান মামলার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। ওই দুই মাসে খুনের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এমনকি সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, ও নভেম্বরেও এ বিষয়ে মামলা হয়েছে এবং আরও মামলা হচ্ছে। যে মাসে মামলা হয়, সেই মাসের তালিকায় তা যুক্ত করা হয়।”

এ পরিসংখ্যান দেশের আইনশৃঙ্খলার চিত্রের গুরুতর অবস্থা প্রকাশ করছে, যা বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।