সৈয়দ জাহিদুজ্জামান দিঘলিয়া খুলনা থেকে : খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠে মাঠে পাকা সোনালি ধানের সমারোহ। হেমন্তের মিষ্টি রোদ আর মৃদু ঠান্ডা বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের মন ভরানো পাকা ধানের শীষ। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ চারদিকে সোনালী পাকা ধান যেন রূপ পাল্টানো এক লীলা ভূমি। সবুজ বর্ণ থেকে সোনালী রং ধারণ করেছে পাকা ধান। কোথাও কোথাও রূপ বা রং পরিবর্তনের অপেক্ষায়। আর মাত্র কদিনের মধ্যেই কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তোলার উপযোগী হবে।
দিঘলিয়ার ব্রহ্মগাতী গ্রামের কৃষক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান টিটো ও মোঃ জাকির হোসেন জানান, পাকা ধান ঘরে উঠবে আর কয়েক দিনের মধ্যে। কৃষক পরিবারে শুরু হবে নবান্নের উৎসব। পাকা ধান থেকে চাল তৈরি করে পিঠাপুলি পায়েস তৈরি করার জন্যও তারা প্রস্তুত। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা কাঙ্খিত ফলন পাবে।
বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, উপজেলায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হবে এমনটাই আশা করছেন এ এলাকার কৃষকেরা। এবারের বর্ষাকালে বর্ষা বেশী হওয়ায় ফসলের মাঠে সোনালী ধানের হাসি কৃষকের মনে বয়ে আনছে অনাবিল আনন্দ।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের আমন ধানের মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে কাঁচা পাকা ধানের শীষ। কৃষকের মনে নেমে এসেছে হেমন্তের নানা স্বপ্ন পূরণের আশা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ২ হাজার ৯৭৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। লক্ষমাত্রার থেকে এবছর ধান চাষ বেশী হয়েছে।
এছাড়া, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে উন্নত মানের বীজ ও সার সহায়তা এবং উপসহকারী কৃষি অফিসারের সাথে কৃষি অফিসার নিজে মাঠে গিয়ে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়েছেন এবং এখনও দিচ্ছেন কৃষকদের।
দেয়াড়া গ্রামের কৃষক জানান, আমাদের মাঠে কিছু জমির ধান ফুলে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে, আবার কিছু জমির ধান কেবল ফুলছে। তবে আর মাত্র কদিন পরেই মাঠের অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করবে। কৃষক শেখ আকতার হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার ধানের ফলন ভালো হবে আশা করছি। সারা বছরের সব কষ্ট ভুলে যায়, এই ধানের শীষ দেখে।
সরোজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সব এলাকার মাঠগুলোতে একই চিত্র। কৃষকেরা আমন ধানের শীষ পরিচর্চায় ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে। পোকা-মাকড় থেকে ধানকে রক্ষা করায় তাদের মূল লক্ষ্য। আর কয়দিন পরেই কৃষক ধান কাটবে এবং বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ কিশোর আহমেদ প্রতিবেদক কে জানান,, ২ হাজার ৯৭৭ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। এবছর আমনের চাষ বেশী হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কৃষকদের ধান ভালো পর্যায়ে আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা কাঙ্খিত ফলন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কাজেই কৃষক সঠিক সময় ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।