শাহজাদপুর নরিনা ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম ও সহকারী আফজালের ঘুষ বানিজ্যের ডিজিটাল কৌশল!

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ১২নং নরিনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ঘুষ বাণিজ্যের ডিজিটাল কৌশল।  দায়িত্বের অবহেলা ও নীতি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে স্থানীয় দের তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা একক উদ্যোগে নায়েব মঞ্জুর আলম ও তার ঘনিষ্ঠ সহকারী আফজাল-এর অবিলম্বে সাময়িক বরখাস্ত (suspension) ও দৃষ্টান্ত মূলক তদন্ত শুরুর দাবি জানিয়েছেন।

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ-এর অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উক্ত দুই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে দলিল খারিজ, নামজারি ও অন্য অন্য ভূমি সেবার নামে নিয়মিত ভাবে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে প্রতিটি দলিল খারিজের জন্য হাজার হাজার টাকা দাবি করা হয়, না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এক ভুক্তভোগীর দলিল খারিজের ক্ষেত্রে সহকারী আফজাল সরাসরি ১২,০০০ টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং অর্থ না দিলে কাজ না করার হুমকি দেন। অন্যদিকে, আহসান নামের এক ব্যক্তি জানান, তার চারটি দলিলের প্রতিটির জন্য ৭,০০০ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হয়। আরও কয়েক জন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীও একই অভিযোগ তুলে বলেন ঘুষ না দিলে অফিসে কোনো কাজ হয় না।

অভিযোগ আরও গুরুতর হয়ে ওঠে যখন সাংবাদিক পরিচয় জানার পর সহকারী আফজাল নিজেই সংবাদকর্মীকে ‘ম্যানেজ  করার’প্রস্তাব দেন। যা স্পষ্টতই প্রশাসনিক নৈতিকতা ও আইনের প্রতি চরম অবমাননা।

স্থানীয়দের ভাষায়, নায়েব মঞ্জুর আলম সরাসরি ঘুষ না নিলেও, তার নির্দেশ ও নীরব সম্মতিতেই আফজালের মাধ্যমে প্রতিদিন অবৈধ অর্থ লেনদেন হচ্ছে। ফলে এই সিন্ডিকেট প্রকাশ্যেই কাজ করছে এবং নরিনা ভূমি অফিসকে ঘুষ বাণিজ্যের আড্ডায় পরিণত করেছে। ঘুষ নেওয়ার এক ডিজিটাল কৌশল!

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল ভূমি সেবা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি যখন মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি মুক্ত সেবা নিশ্চিত করার কথা ছিল, তখন নরিনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এই কর্মকাণ্ড পুরো প্রশাসন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যদি প্রশাসন দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি সেবার প্রতি আস্থা সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হবে। তাই স্থানীয় সমাজ ও ভুক্তভোগীরা এক বাক্যে দাবি তুলেছেন নায়েব মঞ্জুর আলম ও সহকারী আফজালকে  সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করতে হবে।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার (termination) ও দৃষ্টান্ত মূলক আইনি শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে। এছাড়া, অনলাইন ভূমি সেবা কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও তদারকি জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে মধ্য স্বত্বভোগী ও দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়।

অসংখ্য ভুক্তভোগীর প্রশাসনের প্রতি এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানায়, যদি তাদের কোনো ব্যাখ্যা বা বক্তব্য থাকে, তা প্রকাশের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। তবে জনগণের দাবি একটাই দুর্নীতিবাজদের আর আড়ালে নয়, সরকারি সেবা হতে হবে ঘুষ মুক্ত।

উল্লেখ যোগ্য বিষয় হলো, অভিযুক্ত সহকারী আফজাল বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষার্থী। জনগণের প্রশ্ন যদি এই মন-মানসিক তার ব্যক্তি বিসিএস শেষ করে কোনো সরকারি পদে যোগ দেন, তবে কি ঘুষ বাণিজ্যের জন্য তিনি ‘নোবেল পুরস্কার’ পাবেন? এই প্রশ্ন আজ প্রশাসনের সততা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর এক তীব্র ব্যঙ্গ চিহ্ন একে দিয়েছে।

এবিষয়ে,উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সঙ্গে কথা হলে, তিনি বলেন, নায়েব ও তার সহকারীর বিরুদ্ধে উল্লেখ্য অভিযোগের ব্যাপারে খতিয়ে দেখার জন্য আমরা কাজ করছি, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com