মনির হোসেন জীবন : রাজধানীর উত্তরায় উইন্ডি কর্পোরেট অফিসের ভল্টরুম থেকে নগদ এক কোটি টাকা চুরির ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি ম্যানেজারসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। পুলিশ বলছে, দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধারের বিষয়ে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রাশেদ নিজাম (৩৭) ও মো. সাইদুর রহমান (৪৩)। গ্রেফতার রাশেদ নিজাম প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ম্যানেজার (ফাইন্যান্স) পদে কর্মরত ছিলেন। সে কুমিল্লার লাকসাম থানার জগতপুরের মো. মীর হোসেনের ছেলে। সাইদুর সাভার বাজার রোড এলাকার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে ডিএমপি’র উত্তরা বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সম্প্রতি রাজধানীর পল্লবী ও সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, উত্তরা পশ্চিম থানার ১০ নং সেক্টরের ১৩ নং রোডের ৯৫ নং বাসায় অবস্থিত উইন্ডি ( WINDY) গ্রুপের কর্পোরেট অফিসে গত ০৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিট ও ০৪ অক্টোবর সকাল ৭টা ৪৬ মিনিটে প্রতিষ্ঠানটির ফাইন্যান্স বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার মোঃ রাশেদ নিজাম অফিসের ভল্ট রুম খুলে লকার থেকে নগদ এক কোটি টাকা চুরি করে কৌশলে পালিয়ে যায়।
এঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ডিজিএম (এডমিন, এইচআর এন্ড কমপ্লায়েন্স) মো. হাসিম মিয়া বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় অভিযুক্তদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার ও জড়িত আসামিদের গ্রেফতারে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় (১৪ অক্টোবর ২০২৫) পল্লবী থানাধীন ব্লক-বি, রোড নং-০৯ এর ১৫২ নং বাসা থেকে মূল আসামি মোঃ রাশেদ নিজামকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার লাগেজ হতে নগদ ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তার সহযোগী মোঃ সাইদুর রহমানকে সাভার থানার ব্যাংক কলোনি এলাকার বি/৪২ নং বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত হতে চুরির আরও ২৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ইতিমধ্যে চুরি হওয়া মোট ৫৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেছে।
একটি সূত্র বলছে, গ্রেফতারকৃত আসামিরা আগে থেকেই প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ তথ্য জানত। সেই সুযোগেই তারা পরিকল্পিতভাবে ভল্ট রুমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পাশ কাটিয়ে নগদ অর্থ আত্মসাৎ করে।
ডিএমপি’র উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত চুরি। এঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৫৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে অফিসের অভ্যন্তরে কাজের সুবাদে টাকার অবস্থান ও সময় সম্পর্কে জানত। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, ডিএমপি উত্তরা বিভাগের পুলিশের ডিসি মো. মহিদুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চুরি হওয়া অর্থের বাকি অংশ উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি- খুব দ্রুতই অবশিষ্ট টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এ সময় অভিযানে অংশগ্রহণকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশংসা করেন তিনি।