নেই কোন সংস্কার, নেই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা; সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত সাঘাটার জনজীবন

আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে গাইবান্ধার সাঘাটা বাজারের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

সাঘাটা বাজারের পল্টন মোড় থেকে শুরু করে এর আশেপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাজারের ভিতরের অংশেও সামান্য বৃষ্টি হলে নোংরা পানি ও কাঁদা জমে থাকে। এর ফলে ঐ এলাকায় বসবাসরত মানুষদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন-যাপন।

এছাড়াও বাজারের প্রবেশপথ সাঘাটা হাসপাতালের সড়ক,বালিকা উচ্চবিদ্যালয় সড়ক, ডিগ্রী কলেজের সড়ক,পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও থানা সড়ক,হাসিলকান্দিগামী সড়ক,চিনিরপটল সড়কসহ আশেপাশের কয়েকটি সড়কের বেহাল অবস্থা। বাজার প্রবেশের সড়ক গুলোতে প্রয়োজনীয় পানি নিস্কাশন ব্যবস্থাসহ সংস্কার ও প্রশস্তকরণের অভাবে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে হাসপাতালগামী রোগী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু-শিক্ষার্থীসহ এই এলাকার জনসাধারণের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বাজারের পল্লী চিকিৎসক ডাঃ জিল্লুর মন্ডল জানান,“সম্মুখ গলিতেই নোংরা পানি ও কাঁদা জমে থাকে। চেম্বার ও ঔষধের দোকানে প্রতিদিন শতাধিক রোগি আসে। তারা নিরুপায় হয়ে কাঁদা পায়ে প্রবেশ করে বলার কিছুই থাকেনা।”

আরেক জনপ্রিয় পল্লী চিকিৎসক ডাঃ দ্বিজেন্দ্রনাথ পাল জানান,“বৃষ্টিতে জলবদ্ধতার কারণে চিকিৎসা নিতে আসার রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই রাস্তায় একজন রোগীকে নিয়ে চলাচল করা বেশ অস্বস্তিকর।”


কাঁচামাল ব্যবসায়ী রুবেল জানান,“এই গলিতেই প্রতিদিন ফল ও সবজির দোকান বসে । এখানে নোংরা পানি আর কাঁদা থাকায় নিচে ইট,পাথর অথবা কাঠ দিয়ে দোকানে বসতে হয়। কাঁদার কারণে বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা চরম দুর্ভোগে পরে।বেশির ভাগ সময় এখানে জলাবদ্ধতার কারনে কাঁদা থাকে ও দুর্গন্ধ ছড়ায়।”

বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাজেদ মন্ডল রাঙ্গা জানান,“বাজারের অবস্থা শোচনীয়,বৃষ্টি হইলে পানি নিষ্কাশন হতে দেরি হওয়ায় পথ কর্দমাক্ত হয়ে যায়। বাজার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে ভাঙা ইট এনে দিলেও তা অপ্রতুল। সরকারিভাবে সংস্কার অতীব জরুরী। কিন্তু সরকারি ভাবে সংস্করণের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।”

ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান,“বাজারের ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে সাঘাটা বাজারের উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা,একটা অস্থায়ী ড্রেন করেছিলাম। সৌচাগারের জন্য টিউবওয়েল স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা স্থাপন করতে দেয়নি। যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে জোরজুলুম করে করতে হয়েছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল কামাহ্ তমাল বলেন,“বাজারগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।”

সাঘাটা বাজার এলাকা উপজেলার অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। এছাড়া এই বাজারটির আশেপাশে রয়েছে উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, একটি সরকারি কলেজ,দুটি উচ্চ বিদ্যালয়,দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি প্রাথমিক পর্যায়ের কিন্ডারগার্টেন স্কুল,বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টারসহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতি।

গত বছর ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব উদ্যোগে জোড়া-তালি দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কিছু সংস্কার কাজ করলেও তা তেমন ফলপ্রসু হয়নি।এই জনভোগান্তি নিরসনে সাঘাটা বাজারের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ আশেপাশের সড়কগুলোর সংস্কার করার জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com