রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলারের (প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই দুর্নীতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের সহযোগিতায় সংঘটিত হয়েছে বলে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাশিয়ার রোসাটম কোম্পানির মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ করেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়ার ব্যাংকগুলোতে থাকা রাশিয়ার বিভিন্ন স্ল্যাশ ফান্ডের সহায়তায় শেখ হাসিনা এই অর্থ পাচার করেন। রোসাটম কোম্পানির সহায়তায় শেখ হাসিনা ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ পান। এতে মধ্যস্থতা করেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। এটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যুতের চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের নিজস্ব অনুসন্ধানে এই প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য রাশিয়ার সহযোগিতায় ব্যয় ধরা হয় ১২৬৫ কোটি ডলার, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনা এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ পান। টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় শেখ হাসিনা রাশিয়ার সাথে চুক্তি করেন, যার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা এবং পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের মধ্যে ভাগাভাগি হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৩ সালে শেখ হাসিনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টিউলিপ সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। সে সময় টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকা-মস্কো বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প আরও জানায়, ২০০৯ সালে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা এবং চাচা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন। এ কোম্পানির মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রেও তাদের ‘জুমানা ইনভেস্টমেন্ট’ নামে একটি কোম্পানি রয়েছে, যা একইভাবে অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের মতে, শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে দুর্নীতির জালে আবদ্ধ করেছে এবং বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে তুলেছে। ২০১৮ সালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে জার্মান থিংকট্যাংক বেরটেলসম্যান স্টিফটুং বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী শাসনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং টিউলিপ সিদ্দিকের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত আছেন। ২০০৯ সাল থেকে রাশিয়ার কাছ থেকে ‘ঘুষ’ নেওয়ার মাধ্যমে তারা প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন, যা মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com