পার্থ প্রতিম ভদ্র : ফরিদপুরে ১৩ বছরের এক নাবালিকা শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দুই যুবকের যাবজ্জীবন এবং এক শিশু আসামিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার যোগিবরাট গ্রামের আতিয়ার শেখের ছেলে মো. সজীব শেখ (২৬) ও একই গ্রামের ইসলাম মোল্লার ছেলে মো. সোহেল মোল্লা (২৫)। এ মামলার ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শিশু আসামি একই গ্রামের আবু বক্কার মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ ইয়াসিন মোল্লা (২৪); ইয়াসিন ঘটনার সময় বয়সে শিশু ছিল। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের পুলিশ প্রহরায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই রাতে মেয়েটি পরিবারের সদস্যদের সাথে টিভি দেখতেছিল। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিভি দেখা শেষে টিউবয়েলে হাত-মুখ ধুতে গেলে মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি তিনজন তাকে জোর করে তুলে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে মুখ বেঁধে ফেলে রেখে যায়। পরে শিশুটির সাড়া শব্দ না পেয়ে মা মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে বাড়ির পাশে এক আসামীর বাড়ির উঠানে শিশুটিকে দেখতে পাই। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
এ ঘটনার তিনদিন পর ২০১৮ সালের ২ আগস্ট শিশুটির বাবা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আলফাডাঙ্গা থানায় সাজাপ্রাপ্ত তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জসিট জমা দেওয়ার পর দীর্ঘ শুনানি শেষে ৭ বছরের মাথায় আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পি.পি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া রতন জানান, আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলার এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। এ মামলার রায়ে একটি দৃষ্টান্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে ধর্ষকদের জন্য।