দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে, কর্মচাঞ্চল্যও বেড়েছে : অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন

বাসস : বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় শ্বেতপত্র কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে, কর্মচাঞ্চল্যও বেড়েছে।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠানে ‘ম্যাক্রোইকোনমিক চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি আজ একথা বলেন। 

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতা ফিরেছে তার কারণ হচ্ছে, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার পেছনে যারা ছিলেন তারা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। দেশ থেকে অর্থপাচার বন্ধ হয়েছে।’

তিনি বলেন, হুন্ডি কমে গেছে, বৈদেশিক মুদ্রা বৈধপথে দেশে আসছে। অন্যদিকে ব্যাংকের লুটপাট বন্ধ হয়েছে।’

ড. জাহিদ বলেন, ‘এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেসব সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে, সেগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির পক্ষে গেছে। বিশেষ করে ডলারের দাম কমে যাওয়া উল্লেখযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের শুল্ক বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।’

ড. জাহিদ একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, ‘ভারত এবং চীনের উপরে ট্রাম্প প্রশাসন যে হারে শুল্ক আরোপ করেছে তাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের সামনে মার্কিন বাজারে ২০৫ কোটি ডলারের বেশি রপ্তানি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের ওপর ৩০ শতাংশ বেশি শুল্কারোপ করায় ১২০ থেকে ২০৭ কোটি ডলার বেশি রপ্তানি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর চীনের ওপরে বেশি শুল্কারোপ করার কারণে সাত থেকে পঁচিশ মিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি হতে পারে মার্কিন বাজারে।’ 

তিনি বলেন, ‘সার্বিকভাবে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের ফাঁদে আটকে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট, দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাংক খাত, লজিস্টিক সিস্টেমের দুর্বলতা, লেবার মার্কেটের উন্নয়ন না হওয়া, প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয় এর অন্যতম কারণ।’

ড. জাহিদ বর্তমান সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেই যে সংস্কার হবে তার নিশ্চয়তা নেই। সংস্কার করার জন্য রিফর্ম ডেলিভারি ক্যাপাসিটি থাকতে হবে। এক্ষেত্রে উপদেষ্টা পরিষদ, প্রশাসন, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও নাগরিক সমাজের যৌথ বা সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। এই চারটি পক্ষ যৌথভাবে কাজ না করলে সংস্কার কোথাও না কোথাও আটকে যাবে।

ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ আবুল কাশেম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com