ডাল মিলের দূষণ ও উচ্চশব্দে বসবাসের অনুপযোগী আবাসিক এলাকা

ইবি থানা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর বাজার সংলগ্ন সৌরভ ডাল মিলের দূষণ ও উচ্চশব্দে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকা। মিলের পার্শ্ববর্তী অনেক ভাড়া বাসা ইতোমধ্যেই ছেড়ে দিয়েছেন ভাড়াটিয়ারা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব বাড়ির মালিকরা। এ ছাড়া শব্দ দূষণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা পড়েছে ঝুঁকিতে। আবাসিক এলাকায় মিল অথচ নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাল মিলটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সত্যতা পাওয়া গেছে। যদিও এদিন বন্ধ ছিল মিলটি। মিলের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা বলছেন, আজকে মিল বন্ধ থাকায় এই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে। নাহলে ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে বসে থাকতে হয়।

মাধুরি কর্মকার নামে এক গৃহবধূ বলেন, প্রথমে এটা গোডাউন ছিল। এরপর ধীরে ধীরে বিশাল মিলে পরিণত হয়েছে। কেউ সম্ভবত জানেও না, এখানে এতো বড় মিল চলে। এই মিলের ধূলা ও শব্দের কারণে আমরা ঘরে বাড়িতে দাঁড়াতে পারছি না। এর একটা প্রতিকার হওয়া দরকার।

মিলের পার্শ্ববর্তী বাসার একজন ভাড়াটিয়া বলেন, মিলের ধুলোবালির কারণে এক মিনিট জানালা খোলা যায় না। সকাল বিকাল দুইবেলা ঘর মুছতে হয়। অন্যসব ভাড়াটিয়া চলে গেছে। আমি শুধু চাচির মায়ায় যেতে পারিনি। উনার কেউ নাই দেখে পড়ে আছি।

মিলের মালিক লক্ষণ প্রতারণার মাধ্যমে সেখানে মেশিন স্থাপন করেছেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুলের। তিনি বলেন, প্রথমে ছিল গোডাউন। পরে একদিন মেশিন নিয়ে আসলে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলি। তারা বললেন, এই মেশিনে কোনো শব্দ হবে না। কিন্তু পরে দেখি বিকট শব্দ। পুনরায় জানতে চাইলে লক্ষণ সাহেব বলেন- নতুন মেশিন, মাসখানিক গেলে ঠিক হয়ে যাবে। এখন ৮-৯ মাস ধরে একই শব্দে ও দূষণে চলছে মিলটি।

শিক্ষার্থীরা ভুগছেন সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণায়। কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী বলেন, শব্দের মাত্রা এতো বেশি যে, বুক ধড়ফড় করে। পড়তে বসলেই মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। অনেক সময় খাওয়ার রুচিও থাকে না। এভাবে বসবাস করা খুবই কঠিন।

পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই আবাসিক এলাকায় চলছে মিল, করছে পরিবেশ দূষণ। এ বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র ক্যামিস্ট হাবিবুল বাসারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা ওই মিলের সম্পর্কে অবগত নই। তিনি আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় ঘটনার বাস্তবতা থাকলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ জামান বলেন, এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবো। তাছাড়া প্রশাসনের একটি টিম মিলটি পরিদর্শন করে দেখবে কী কী অসঙ্গতি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com