গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকায় পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ নিধনের হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যচাষি আজহারুল ইসলাম। এ ঘটনায় তিনি পূবাইল মেট্রো থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী আজহারুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের শুরুতে নিজের মালিকানাধীন পুকুরে লক্ষাধিক টাকার পোনামাছ চাষ করেন তিনি। নিয়মিত খাবার, পরিচর্যা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে পালিয়ে যায়।
পুকুরের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী মাসুদ ও শাহীন দূর থেকে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। তারা দেখতে পান, কয়েকজন ব্যক্তি পুকুরের চারপাশের নিরাপত্তা জাল ভেঙে পানি ও বেড়ার ভেতরে বিষ জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে দেয়। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই মাছগুলো লাফালাফি শুরু করে এবং কিছুক্ষণ পরেই সব মাছ পানির উপর ভেসে ওঠে।
আজহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জায়গাজমি সংক্রান্ত পুরনো বিরোধের জেরে তার প্রতিবেশী আলম হোসেন (৫২), হেকমত আলী (৩৫), আরেফা বেগম (৪২), শাহিনুর বেগম (৩০) ও ইকবাল হোসেন (৪০)—এই পাঁচজন মিলে তার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছে। তিনি জানান, পুকুরে বিষ দেওয়ার প্রতিবাদ করায় অভিযুক্তরা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার জন্য তেড়ে আসে। এমনকি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটিকে বর্বরোচিত ও পরিকল্পিত হামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সচেতন নাগরিক মো. সিরাজ বলেন, “খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, সব মাছ মরে পানির উপরে ভেসে আছে। পুকুরে বিষ পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ভাসতে দেখি। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আলিম উদ্দিন বলেন, “এই ঘটনা পূর্বশত্রুতার ফল। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
এ বিষয়ে পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলমান মামলা প্রক্রিয়াদিন রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।”