মক্কা টেলিকমের ভয়াবহ অনলাইন প্রতারণা… সাইবার ট্রাইবুনালে মামলার প্রস্তুতি…

বিশেষ প্রতিবেদন : ৯১.০৪ শতাংশ মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আবেগকে পুঁজি করে মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর মক্কা’র নামেই যখন ব্যবসার নামে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর প্রতারক অনলাইনে প্রতারণা করে তখন তা ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মেনে নিতে পারেনা। তেমনই একটি অনলাইন প্রতারক চক্রের নাম মক্কা টেলিকম।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইন্টারনেট ও মিনিট বান্ডেল বিক্রয়ের নাম করে এই প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে তার প্রমানও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদক নিজেই গ্রাহক সেজে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে প্রতারকরা সেই ফাঁদে পা দেয় এবং অজান্তেই প্রতারণার তথ্য দিতে থাকে প্রতিবেদকের কাছে।

প্রতারক চক্রটি ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ০১৮৭২৪১৭৪৪২ নাম্বার থেকে ম্যাসেজ দিয়ে ইন্টারনেট অথবা মিনিট বান্ডেল কেনার জন্য বিভিন্ন পরিমানে টাকা পাঠানোর কথা বলে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদক তাদের তথ্য বের করার জন্য প্রথমে ৪২০ টাকা প্রতারকের দেয়া ০১৮৫২৭০৩৬১৫ বিকাশ নাম্বারে পাঠালে তারা জানায়, আপনি ভুল করেছেন, রেফারেন্সে আপনি কিছুই লিখেন নি, তাই আপনার অফারটি ব্লক হয়ে গেছে, নতুন করে আবারও রেফারেন্সে মানি ব্যাক লিখে ৪২০ টাকা পাঠান, তাহলে আপনার অফারটি চালু হবে এবং আগের পাঠানো ৪২০ টাকা আপনার বিকাশে ফেরৎ পাঠানো হবে। প্রতারকের কথামতো আবারও ৪২০ টাকা এবং রেফারেন্সে মানি ব্যাক লিখে পাঠানো হলে এবার প্রতারকরা নতুন কৌশল অবলম্বন করে বলেন, আপনি আবারও ভুল করেছেন রেফারেন্সে মানি ব্যাক লিখাটি হয়নি, তাই দুটো সেন্ড মানিই ব্লক হয়ে গেছে। এবার আপনার ব্লক খোলার জন্য ৮৪০ টাকা সেন্ড মানি করতে হবে তাহলে আপনি আপনার আগের টাকা ফেরৎ পাবেন এবং আপনার বান্ডেল এক্টিভ হয়ে যাবে।

এবার প্রতিবেদক নিজের পরিচয় দিয়ে প্রতারক চক্রের সাথে কথা বললে প্রতারক বলেন, আপনি যত বড় প্রশাসনিক লোক হন বা সাংবাদিক হন তাতে আমার কিছু আসে যায় না, আপনি যা খুশি করতে পারেন।

প্রতারক চক্রটি দেশের একজন সুনামধন্য ক্বারী মাহমুদুল হাসানের ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে ক্বারী মাহমুদুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ছবি ব্যবহার করে মক্কা টেলিকম সহ আরও একাধিক ফেসবুক পেইজ খুলে প্রতারণা করছে বলে জানতে পেরেছি। আমি এনিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছি, আমি অতি শিঘ্রই বিষয়টি নিয়ে থানায় অবগত করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

এবিষয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। একই অপরাধ পুনরায় করলে শাস্তির মাত্রা বেড়ে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হতে পারে। সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনে মামলার প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com