মোঃ রফিকুল ইসলামঃ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি) কর্তৃক পরিচালিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রাবেয়া আনোয়ার মাতৃসদন একটি আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্রে গর্ভবতী মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়ে থাকে।
এই কেন্দ্রের প্রজেক্ট ম্যানেজার ও এফপিএবি’র ব্যাক্তিগত কর্মকর্তার যোগসাজশে নিয়োগ, বদলী, বেতন, কেনাকাটায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার ঘুষবাণিজ্য অনিয়ম-দুর্নীতি যেন ওপেন-সিক্রেট। কিন্তু, সবকিছুই অদৃশ্য হাতের ইশারায় ম্যানেজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এফপিএবি’র পরিচালিত এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে কর্মরতদের বেতন মাসের-পর-মাস আটকে রেখে ও চাঁদা বা বেতনের ৩৫% পর্যন্ত কমিশন আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রের প্রজেক্ট ম্যানেজার পাপিয়া রহমানের বিরুদ্ধে।
প্রথমে, এমনকি ৬ মাস পর্যন্ত বেতন আটকে রাখা হয়। প্রজেক্ট ম্যানেজার পাপিয়া রহমান দেনদরবার করে কর্মরতদের ওপর বেতনের ৩৫ ভাগ পর্যন্ত কমিশন আরোপ করেন। কেউ এর প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত করার হুমকী দেন। এভাবেই চলে আসছে পাপিয়া রহমানের অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য।
এর মধ্যে পাপিয়া রহমানের চাঁদাবাজির প্রমাণস্বরূপ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ডাক্তার তালহা এবং এফপিএবি’র ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কথোপকথনের একটি অডিয়ো ক্লিপ এই প্রতিনিধির হাতে আসে।
কথোপকথনে ডাক্তার তালহাকে বলতে শোনা যায় যে আটকে থাকা ৬ মাসের বেতন তুলতে তাকে অভিযুক্ত পাপিয়া রহমানকে প্রথমে ১২ হাজার পরে ৭ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।
ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করে এফপিএবি’র ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, তিনটি জোনের কর্মীদেরকেই বেতন তোলার জন্য টাকা দিতে হয়েছে।
রাবেয়া আনোয়ার মাতৃসদনে ইন্সট্রুমেন্ট ও ফার্নিচার ক্রয়ে ব্যাপক দুর্নীতিসহ রেড কার্ডধারী রোগীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চার্জ নেওয়া, অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কর্মী নিয়োগ, ট্রেনিং এ নাম দেওয়া-না দেওয়া ও বদলী করা, কেন্দ্রের প্রজেক্ট ম্যানেজার পাপিয়া রহমানের অনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া, চুরি, আত্মসাত ও দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র থাকছে আগামী পর্বে।