আনোয়ার হোসেন রানা,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ জুলাই বিপ্লবে সাংবাদিকতায় সাহসী ভূমিকা পালন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক—দৈনিক মানবজমিনের ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি সাংবাদিক ওমর ফারুক (প্রতীক ওমর)-কে বিশেষ সম্মাননা দেওয়ায়,সাঘাটা উপজেলার সকল সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বেলা ৩ টায় সাঘাটা সাংবাদিক ঐক্য ফোরাম—এর আয়োজনে সাঘাটা প্রেসক্লাবে (বোনারপাড়া) বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক আনিছুর রহমান টিপুর সভাপতিত্বে ও দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান রাঙ্গার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ মোহাম্মদ আলী, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী মোঃ আব্দুল গফুর মন্ডল,বোনারপাড়া সিনিয়র মাদ্রসার উপাধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম,দৈনিক করতোয়া প্রতিনিধি জয়নুল আবেদীন,দৈনিক ঘাঘট প্রতিনিধি আবু সাঈদ মন্ডল,দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন রানা,বাংলা টিভির জেলা প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুন নবী প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতীক ওমর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা’র হয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকতার বাইরে তিনি একজন সংবেদনশীল সাহিত্যিকও বটে। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগ থাকা প্রতীক ওমর সাহিত্য অঙ্গনেও বেশ পরিচিত। তার রচিত তিনটি কাব্যগ্রন্থ—‘পেরেকবিদ্ধ সময়’,‘পড়ন্ত বিকেলের কাছে’ এবং ‘ফিরে যাও মানুষের পল্লী থেকে’ উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলা কবিতায় নতুন ধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির উত্থাপন করেছেন বলে পাঠক ও সমালোচকদের অভিমত। তিনি সাহিত্যের পাশাপাশি সম্পাদনা করছেন সাহিত্যপত্রিকা ‘চিলেকোঠা’, ছড়ার ছোটকাগজ ‘চমচম’ এবং তার সমসাময়িক বিষয়ের মাসিক ম্যাগাজিন ‘আলোচনা’ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতীক ওমর দীর্ঘদিন ধরে সমাজের নানা অনিয়ম, অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সাংবাদিকতা করে আসছেন। নির্ভীকভাবে সত্য প্রকাশে অটল থেকে তিনি পাঠকের আস্থা অর্জন করেছেন। তার এই সাহসী ও নিষ্ঠাবান ভূমিকার জন্য এবার তাকে ‘সাহসী সাংবাদিকতা’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়।
চলতি বছর শহীদ সাংবাদিক, জুলাই আন্দোলনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত সাংবাদিক, সহিংস পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি, ভিডিও ধারণ বা লাইভ সম্প্রচার করা সাংবাদিক এবং সাহসী ভূমিকায় অবদান রাখা সাংবাদিক—এই চারটি ক্যাটাগরিতে পদক প্রদান করা হয়েছে। তিনটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সাড়ে চারশ’ সাংবাদিক আবেদন ও তথ্যপ্রমাণ জমা দেন। যাচাই–বাছাই শেষে ১৯২ জন সাংবাদিককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে পদক তুলে দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব জার্নালিস্টস (বিএজে)-এর সভাপতি ও দেশনিউজ.নেট-এর সম্পাদক এম আবদুল্লাহ। তার হাত থেকেই প্রতীক ওমর এই সম্মাননা গ্রহণ করেন।
প্রতীক ওমর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ হতে স্নাতকোত্তর করছেন। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় হলেও বর্তমানে তিনি বগুড়া জেলা থেকে নিজস্ব অফিস পরিচালনার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই অর্জন সাংবাদিক সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং তরুণ সাংবাদিকদের জন্য তা অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।