বিশেষ প্রতিনিধি: আজ বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে পুনরায় আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে আপাতত পারাবত এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস এবং সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো চলবে না। এই তথ্য গতকাল বুধবার ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ থেকে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হবে। স্টেশনে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী রয়েছে এবং রেলের নিরাপত্তা বাহিনীও কাজ করবে।”
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়, আর তারও আগের দিন সোমবার মালবাহী ট্রেন চালু করা হয়।
ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বিভিন্ন ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে। বলাকা, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, মহুয়া এক্সপ্রেস, তুরাগ, কর্ণফুলী এবং তিতাস কমিউটারসহ বিভিন্ন ট্রেন সকালে যাত্রা শুরু করেছে এবং একইভাবে ঢাকায়ও ট্রেনগুলো পৌঁছাচ্ছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে দায়িত্ব নেওয়া প্রথম কার্যদিবসে, গত রোববার রেল ভবনে একটি সভায় ট্রেন চলাচল পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হয় সোমবার বিকেল ৫টা থেকে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সময় গত ১৬ জুলাই ঢাকাসহ গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, ময়মনসিংহ, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে রেলপথ অবরোধ করা হয়। এতে ট্রেন চলাচলে কয়েক ঘণ্টার বিঘ্ন ঘটে। পরের দিন ট্রেন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও, ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় ঢাকার মহাখালীতে রেললাইনে আগুন ধরিয়ে অবরোধ করা হয়, নরসিংদীতে রেললাইন তুলে ফেলা হয়, এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলপথে অবরোধ গড়ে তোলা হয়। নিরাপত্তার অভাবে দুপুরের পর সব ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয় এবং এক সপ্তাহ পর সীমিত পরিসরে ট্রেন চালুর পরিকল্পনার ঘোষণা আসে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সেদিনও ট্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়নি।
১৩ দিন বন্ধ থাকার পর, ১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়। কিন্তু দুদিন চলার পর ৩ আগস্ট আবারও ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের কারণে। সেই আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।