৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হবে ৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন: আসিফ নজরুল

চ্যানেল7বিডি ডেক্স: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত ৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। এছাড়া, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে বলেও তিনি জানান।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ৬ সংস্কার কমিশনের প্রধানদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে আসিফ নজরুল এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
আসিফ নজরুল বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি ৬ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। এরপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের কাজ শুরু করবে এবং মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে।

তিনি আরো যোগ করেন, সংস্কার কমিশনের প্রধানরা প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি কমিশনের আশু, মধ্য মেয়াদ ও দীর্ঘ মেয়াদী করণীয় বিষয়ে পর্যালোচনা করবেন। নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী করণীয় বিষয়েও আলোচনা করা হবে। এরপর প্রতিবেদনটি রাজনৈতিক দল ও জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীজনদের কাছে পাঠানো হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি জানান, এই বৈঠকে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। কমিশনের সভাপতিত্ব করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সংবিধান সংশোধন নিয়ে আলোচনা
সংবিধান পুনর্লিখন বা সংশোধন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন বা বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে হলে গণপরিষদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো অনুমোদন পেতে পারে। তবে, এটি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

সংস্কার কমিশন গঠনের পটভূমি
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ১ মাস ৩ দিনের মাথায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৬টি সুনির্দিষ্ট কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। এগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান হন সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান হন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হন অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

তথ্যসূত্র: বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।