সিরিয়ায় সুন্নীদের বিজয়: জোলানির নেতৃত্বে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা

অনলাইন ডেস্ক: সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের মাধ্যমে একটি দীর্ঘ অন্ধকার যুগের সমাপ্তি ঘটেছে। সুন্নী বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। এই সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামক ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। জানা যায়, তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর বংশধর।

আসাদের সরকারের পতন

৮ ডিসেম্বর, রোববার, এইচটিএসের এক বিবৃতিতে সিরিয়ার মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, দীর্ঘ দুই দশক শাসনের পর বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এইচটিএসের প্রধান জোলানির নেতৃত্বে এই বিজয় সুন্নী মুসলিমদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি: অতীত থেকে বর্তমান

আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্ম নেওয়া জোলানির পরিবার পরে সিরিয়ায় ফিরে আসে। ২০০৩ সালে ইরাকে আল-কায়েদায় যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর সশস্ত্র কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১১ সালের সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আল-নুসরা ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ইদলিবসহ বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

এইচটিএসের পথচলা ও পরিবর্তন

জোলানি শুরুতে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেও পরে তাঁদের পথ আলাদা হয়। ২০১৬ সালে তিনি আল-নুসরা ফ্রন্ট বিলুপ্ত করে জাভাত ফাতেহ আল-শাম গঠন করেন। ২০১৭ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সমন্বয়ে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) প্রতিষ্ঠা করেন।

জোলানির নেতৃত্বে এইচটিএস ধীরে ধীরে একটি জাতীয়তাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনে এইচটিএসের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত কার্যকর।

ভবিষ্যতের লক্ষ্য

এইচটিএসের ঘোষিত লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—সিরিয়াকে স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত করা, ইরানের প্রভাব হ্রাস করা এবং তাদের নিজস্ব ‘ইসলামি আইন’-এর ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র গঠন করা। সিরিয়ায় সুন্নীদের বিজয়ের এই ঘোষণা তাদের জন্য নতুন ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।