জেলা প্রতিনিধি : ঢাকার সাভারে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক শ্রমিকরা। অন্যথায় শ্রমিকরা শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ পাওনা পরিশোধের দাবি জানান।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে পৌর এলাকার উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের এইচ আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নীট গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
সকালে কারখানা দুটির শ্রমিকরা ঈদের ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার মূল ফটকে লে-অফের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই লে-অফ ঘোষণা করেছে। সকালে কারখানায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা নোটিশ দেখতে পান। পরে শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেয়াসহ বকেয়া পাওনা পরিশোদের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
এর আগে শনিবার (০৫ এপ্রিল) কারখানা দুটির মূল ফটকে ষাটানো কারখানা দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কমপ্লায়েন্স) মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে ০৭ এপ্রিল থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই কারখানার গার্মেন্টস শাখায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়। তবে প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা বিভাগ এই লে-অফ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, কারখানায় কাজ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রাইড গ্রুপের দুটি কারখানায় লে-অফের নোটিশ লাগানো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা বলে মনে করছি। যদি কাজ না থাকে এবং মালিকপক্ষ কারখানা না চালাতে পারেন তাহলে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।
প্রাইড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কমপ্লায়েন্স) মনিরুল ইসলাম বলেন, মূলত অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই কারখানা দুটিতে লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে কোভিডের সময় আমরা বড় একটা ধাক্কা খাই। সেটি কাটিয়ে উঠার পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের প্রধান বায়ার (পোল্যান্ড, রাশিয়া, ইউক্রেন) হারিয়ে আবারও ধাক্কা খেলে আমাদের ব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা নষ্ট হয়। এরপরও কাজের অর্ডার পেতে কষ্ট হচ্ছিলো। এখন আবার জ্বালানী সমস্যা।
তিনি বলেন, সব মিলিয়ে আরও তিন মাস আগে থেকেই আমরা সমস্যার কারণে ৭ তারিখে বেতন দিতে না পেরে ১০ থেকে ১৫ তারিখে বেতন দিচ্ছিলাম। ঈদের আগে যাতে শ্রমিকদের সমস্যা না হয় সে জন্য আমাদের অন্য ব্যবসা থেকে প্রাইডের শো-রুম, শাড়ি ও কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেও আমরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরাও জানে আমাদের হাতে দুই মাস ধরে কাজ নেই, তারা কারখানায় এসে বসে থাকতো। তবে আমরা আশাবাদী ব্যাংক এবং বায়াদের সাথে কথা হচ্ছে এই মাসের ২০-২২ তারিখে একটা সেটেলমেন্ট হয়ে গেলে তখন হয়তো আমরা লে-অফ থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।