অনলাইন ডেক্স: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী জিমি কার্টার মারা গেছেন। স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজ বাড়িতে ১০০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কার্টারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার প্রতিষ্ঠান, কার্টার সেন্টার। ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্টার তার ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন। তার সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৯ জানুয়ারি জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন এবং রাজধানীতে ‘স্টেট সার্ভিস’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন। কয়েকদিন ধরে চলবে আনুষ্ঠানিকতা, এরপর প্রাইভেট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কার্টারকে তার প্রয়াত স্ত্রী রোসালিনের পাশে সমাহিত করা হবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৯৭৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কার্টার। ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনে ভূমিকা রাখেন তিনি। তবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং ইরানের জিম্মি সংকটের কারণে তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রোনাল্ড রিগানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর কার্টার দীর্ঘ জীবনযাপন করেন এবং মানবিক কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক সংঘাত নিরসন, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করেন। ২০০২ সালে তার এই প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কার্টার মেলানোমাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অতিরিক্ত চিকিৎসার পরিবর্তে হসপিস যত্ন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। তার স্ত্রী রোসালিন ২০২৩ সালের নভেম্বরে মারা যান।
জিমি কার্টারের মৃত্যুতে বিশ্বব্যাপী শোক প্রকাশ করা হয়েছে। চীনসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কার্টার যুক্তরাষ্ট্র-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আটলান্টা এবং ওয়াশিংটনে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষ এবং বিশ্ব নেতারা উপস্থিত হবেন। পরে তিনি প্লেইনসে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। কার্টার ৪ সন্তান এবং ১১ জন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।