অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সুখবর এসেছে। ১৪তম টেস্টে এসে প্রথমবারের মতো জয় লাভ করেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সফল হলেও, টেস্টে এই প্রথম জয় এসেছে। আগের ১৩ টেস্টের মধ্যে ১২টিতে পরাজয় এবং একটি জয় ছিল বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে ম্যাচ হওয়ায় পাকিস্তানকে ফেভারিট হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। তবে, শেষদিনে সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ঘূর্ণি বোলিংয়ের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত জয় অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এতে ২০২২ সালের পর পাকিস্তান ঘরের মাঠে জয় না পাওয়ার হতাশা কাটাতে পারল না।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং দেশ সংস্কারের দিকে এগিয়ে চলে। বিসিবির হটসিটেও পরিবর্তন আসে। নাজমুল হাসান পাপন দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ নতুন বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ক্রিকেট নতুন করে সম্ভাবনা দেখাতে শুরু করেছে, এবং প্রথম ম্যাচেই জয় লাভ করেছে, তাও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।
শেষ দিনে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করতে মাত্র ৩০ রান দরকার ছিল। হাতে ছিল ১০ উইকেট এবং সময়ও পর্যাপ্ত ছিল। সফরকারীদের জয় পাওয়া খুব সহজ ছিল। দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং সাদমান ইসলাম দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। জাকির হাসান ১৫ রান এবং সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
ম্যাচটি শুরু হয় ২১ আগস্ট। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৪৪৮ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করে। তখন মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ হয়তো ম্যাচটি হারবে। কারণ, পাকিস্তানের ঘরের মাঠে মোকাবেলা করা সহজ নয়। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম দিনে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের গতিপথ বদলে দেন টাইগার বোলাররা।
চতুর্থ দিনে সাইম আইয়ুবের উইকেট হারিয়ে ৯৪ রানে পিছিয়ে ছিল পাকিস্তান। শেষ দিনে এসে তারা ১১৮ রান করে ৮ উইকেট হারায়। এতে বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। একপ্রান্তে উইকেট আগলে রাখা মোহাম্মদ রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত ৫১ রান করে ১৪২ রানের স্কোরে ৯ম উইকেট হিসেবে বিদায় নেন। তার বিদায়ের পর মেহেদি মিরাজ মোহাম্মদ আলীকে এলবির ফাঁদে ফেলেন, যা ছিল মিরাজের ৪র্থ উইকেট। পাকিস্তানের দলের রান তখন ১৪৬ ছিল, ফলে বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৯ রান।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সাদমান ইসলাম ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন এবং মুশফিকুর রহিম ১৯১ রান করে মাঠ ছাড়েন। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ৫৬৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়, যা দিয়ে ১১৭ রানের লিড পায়।